শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতসমূহ -লেদার, ফুটওয়্যার, এমপিপিই, প্লাস্টিক এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার লক্ষ্যে আজ থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশন’।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে)’ প্রকল্পের আওতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন প্রধান অতিথি হিসেবে এক্সপোজিশনের উদ্বোধন করেন। ইসিফোরজে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো আব্দুর রহিম খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। আপনারা যদি কোনো সমস্যায় পড়েন, আমাদের জানান। আমরা সহায়তা করব, একসাথে কাজ করব। আমি সবসময় আপনাদের পাশে থাকব।’
তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) সম্প্রতি একটি সফল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে। সেখানে আমরা আমাদের সক্ষমতা এবং সুযোগগুলো সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করেছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, আমাদের রপ্তানি অনেকটা একক পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। তাই রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা জরুরি। আমাদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা দেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, ‘যারা বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন এবং যারা তাদের পণ্য প্রদর্শনের জন্য এখানে এনেছেন, আমি তাদর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্ট সমস্যার সংকট আমরা অত্যন্ত মসৃণভাবে মোকাবেলা করেছি। অনেকে ভেবেছিলেন এতে আমাদের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি। বরং রপ্তানি খরচ আরও কমবে।’
আয়োজকদের তথ্যমতে , প্রদর্শনীতে ১২০টির বেশি কোম্পানি অংশ নিয়েছে। সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা এতে অংশ নিয়েছেন। তারা প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশি উৎপাদনকারী বিভিন্ন শিল্পকারখানা পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশি উৎপাদনকারীরা এই মেলায় সরাসরি আন্তর্জাতিক ক্রেতা, সোর্সিং এজেন্ট, বিনিয়োগকারী ও খাত সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ পাচ্ছেন।
এছাড়া প্রদর্শনীতে খাতভিত্তিক ব্রেকআউট সেশন, কর্মশালা ও শিল্প বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসা নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজকরা জানান, ইসিফোরজে প্রকল্পের মূল লক্ষ্য তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের বাইরে রপ্তানি বৈচিত্র্য সাধনে সরকারের নীতিগত লক্ষ্য অর্জনে সরাসরি সহায়তা করা।
একইসঙ্গে, সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য নিশ্চিত করে দেশের রপ্তানি আয় ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন, এই উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা মোকাবেলায়ও সহায়ক হবে।
দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত চলবে এবং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।