শিরোনাম
মেহেরপুর, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): জেলার সদর উপজেলার বুড়িপোতা ও কুতুবপুর পাশাপাশি দুটি ইউনিয়ন। এই দুই ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে এক সময়ের প্রমত্ত ভৈরবনদ। কুতুবপুর ইউনিয়নের উজুলপুর গ্রামের অংশে একটি ব্রিজ থাকলেও ৫শ মিটারের মধ্যে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণ চলমান। নির্মাণাধীন ব্রীজটি অপ্রয়োজনীয়।
অথচ বুড়িপোতা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামের অংশে ভৈরব নদের ওপর ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকোই পারাপার হতে হয় ইউনিয়নের ৩ গ্রামের মানুষদের।
জেলা শহরসহ অনান্য এলাকায় আসা যাওয়া করার জন্য এই বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারনে রাধাকান্তপুর অংশে ব্রিজ নির্মানে বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে। রাধাকান্তপুর অংশে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে রাধাকান্তপুর, শালিকা, বাড়িবাকা এই তিন গ্রামের মানুষের যোগাযোগের দুর্ভোগ কমবে। অথচ রাজনৈতিক কারনেই উজুলপুর অংশে ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে সেখানে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হওয়াতে তিনগ্রামের মানুষ এবার ব্রিজ নির্মাণ হবে বলে আশা করছেন।
বুড়িপোতা ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে ভৈরব নদ। আশপাশে ৮ কিলোমিটার নেই কোনো ব্রিজ। চলাচলের জন্য প্রতি বছর চাঁদা তুলে নির্মাণ করা হয় বাঁশের সাঁকো। বছর পার হতে না হতেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে বাঁশের সাঁকো। ফলে ফিবছর গ্রামবাসী চাঁদা তুলে সাঁকো নির্মাণে ব্যয়বার বহন করেন।
এই রাধাকান্তুপুর এলাকায় ভৈরব নদে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। নদের দুই পাড়ের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্রিজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী, কৃষকসহ সব শ্রেণির মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ হচ্ছে।
নদের মেহেরপুর অংশের স্থানীয়রা জানান, নদের ওপারে এক হাজার একর কৃষি জমি রয়েছে। যা পশ্চিম পাড়ের প্রায় চার হাজার মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস।
এছাড়া এলাকায় দেড় থেকে দুইশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন নদের সাঁকো হয়ে যাতায়াত করে। ব্রিজ না থাকার কারনে তারা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। যা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। রাধাকান্তপুরের রিকশা চালক মকলেসুর রহমান জানান, উপায় না থাকায় সাঁকো হয়েই যাতায়াত করতে হয়। ডিজিটাল যুগেও বাঁশের সাঁকো।
গ্রামের স্কুল শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, আমাদের অনেক প্রতিনিধি বিভিন্ন সময়ে ব্রিজ নির্মানে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। রাধাকান্তপুর ভৈরব নদে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে দু‘পারের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।
বুড়িপোতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মুকুল বলেন, বেশ কয়েকবার জমি জরিপের কাজ করেছে এলজিইডি। ঢাকা থেকে কয়েকবার সরকারি লোকবল এসে জায়গা পরিদর্শন করেছেন। এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের ব্রিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা কয়েকবার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রকল্পের অনুমোদন হয়নি। নদী শাসনের গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আরও বলেছেন, জনগনের দাবির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ফের প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।