বাসস
  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০০

নড়াইলে বোরো ধানের অধিক ফলন 

নড়াইলে চলতি মওসুমে বোরো ধানের অধিক ফলন হয়েছে। ছবি: বাসস

\সুলতান মাহমুদ\

নড়াইল, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : জেলার তিন উপজেলায় চলতি মওসুমে বোরো ধানের অধিক ফলন হয়েছে। ক্ষেত থেকে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। 

চলতি মওসুমে জেলার ৩ উপজেলায় ৫০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কৃষি বিভাগ। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত মওসুমে ভালো উৎপাদন এবং ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় এবার ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে স্থানীয় কৃষকরা। 

সদর উপজেলার কলোড়া, সিঙ্গাশোলপুর, তুলারামপুর, শেখহাটি, ভদ্রবিলা, মাইজপাড়া, শাহাবাদ, বাঁশগ্রাম, আউড়িয়া, আগদিয়া ও বিছালী, লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা, আমাদা, দিঘলিয়া, নলদী, লাহুড়িয়া, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী, পুরুলিয়া, পিরোলী, কলাবাড়িয়া, যোগানিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকা ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে কৃষ দের। 

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নিপু মজুমদার বাসসকে জানান, চলতি মওসুমে জেলার ৩ উপজেলায় মোট ৫০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ২৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, লোহাগড়া উপজেলায় ১০হাজার ৩৩৫ হেক্টর এবং কালিয়া উপজেলায়  ১৬হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তিন উপজেলায় ২লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক কৃষক ইতোমধ্যেই ধান কাটা সম্পন্ন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত জেলায় ৬৫ শতাংশ পাকা ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান নিপু মজুমদার।

জেলার সদর উপজেলার কলোড়া গ্রামের বোরো চাষি সুলতান মোল্যা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মওসুমে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা এখন আনন্দের সঙ্গে পাকা ধান কেটে মাড়াই শেষে ঘরে তুলছি।

বিছালী গ্রামের আজাহার গাজী জানান, তিনি ৫০ শতক জমিতে ধান চাষ করে ৫০ মণ ফলন পেয়েছেন। একই গ্রামের নুরু শেখ বলেন, তিনি ৭৫শতক জমিতে বোরোর আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে।  

এবার উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাতগুলো হলো ইস্পাহানি সেভেন, এসিআই’র বন্ধু , সিনজেন্টাল’র হীরা ১২, ব্রাকসিডের সাথী, আফতাবের ১০৬, সুপ্রিম সীডের হীরা সিক্স এবং দেশি জাতের ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ১০০, ১০২, বিনা ২৫ জাতসহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ হয়েছে। 

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন জানান, চলতি মওসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে।  চাষাবাদ সহজ ও সুলভ করতে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সার ও কীটনাশকের কোন ঘাটতি না থাকায়, চাষিদের সেচ সুবিধা থাকায় এবং ধানের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা চলতি মওসুমে বোরো ধান চাষে অধিক মনোযোগী হয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।