বাসস
  ২৪ অক্টোবর ২০২২, ১৮:০০

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উপকূলের ১৩ জেলায় আঘাত হানবে 

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর, ২০২২ (বাসস) : ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উপকূলীয় এলাকার ১৩টি জেলায় মারাত্মকভাবে আঘাত হানবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। 
এটি আজ মধ্যরাত অথবা আগামীকাল ভোর নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় আঘাত হানবে এবং চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চলগুলোতেও বিশেষ করে মহেশখালী, সন্দীপ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
আজ দুপুরে আবহাওয়া অফিসের এক বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত  দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
বুলেটিনে আরও জানানো হয়, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে চট্টগ্রাম খুলনা এবং বরিশাল বিভাগসহ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। 
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানবে। কেন্দ্রে আঘাত করবে ভোরে। উপকূলীয় ১৩ জেলায় মারাত্মকভাবে ও ২ জেলায় হাল্কা আঘাত হানবে। তবে বরগুনার পাথরঘাটা ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এটি উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩টি জেলায় মারাত্মকভাবে এবং দু’টি জেলায় হালকাভাবে আঘাত হানবে। ১৩টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী এবং ফেনী রয়েছে।
বাংলাদেশ উপকূলের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। দুপুর ২টা পর্যন্ত সিত্রাং পায়রা বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক। 
তিনি জানান, পূর্বমধ্যবঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এর আশপাশের উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার দুপুরে  চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত অথবা আগামিকাল ভোর নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিন-৯ এ বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার- যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। 
ঘূর্ণীঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নেয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবরতী দ্বীপ ও চরসমূহের নি¤œাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।