বাসস
  ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:৪৪

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে  

গাজীপুর, ২ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে তাবলীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরের ১৬০ একর বিশাল ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা সামনে রেখে পান্ডেল নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী নিরলসভাবে প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন।
সোমবার টঙ্গীর ইজতেমার মাঠের কাজের সাথে যুক্ত মুরুব্বীরা জানান, ১৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। মাঝে ৪দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার শেষ হবে। ২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি।
এদিকে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরা, তুরাগ, কামারপাড়া, আশুলিয়া, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র, মসজিদের মুসল্লি, তাবলীগের তিন চিল্লার সাথী, পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। কেউ কেউ ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, পুরনো ড্রেন সংস্কার, বাঁশের খুঁটি পোতা, পাটের চট দিয়ে সামিয়ানা তৈরি, ময়দানের চারপাশের স্থাপিত অযু-গোসলের চৌবাচ্চা, টয়লেটগুলো সংস্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি  গ্রহণ করা হয়েছে। আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো ইজতেমা ময়দানকে তিনটি সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ময়দানের আশপাশে ৭ হাজার ৫শ’ ৩৯জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন বলে নিরপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানান।
পুরো ইজতেমা ময়দানকে তিনটি সেক্টরের ভাগ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। টঙ্গী ব্রিজ হতে মন্নু গেট ও তৎসংলগ্ন এলাকা ১নং সেক্টর, কামারপাড়া ব্রিজ হতে মন্নু গেট মোড় ও তৎসংলগ্ন এলাকা ২নং সেক্টর ও কামারপাড়া ব্রিজ হতে তুরাগ নদের তীর ঘেঁষে টঙ্গী ব্রিজ, মূল বয়ান মঞ্চ ও তৎসংলগ্ন এলাকা ৩নং সেক্টরের অধীনে রয়েছে। ইজতেমা ময়দানের চারপাশে পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে ১৪টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাইনোকুলার ও নাইট ভিশন গগলস-এর মাধ্যমে পুরো ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যেবক্ষণ করবেন। ইজতেমা ময়দানে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা নিরসনে ময়দানের চারপাশে স্থাপিত রুফটপ (বহুতল ভবনের ছাদ) টাওয়ার থেকে নজরদারি করা হবে।
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদেরসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ময়দানের চারপাশে স্থাপিত ১০টি কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে টঙ্গী ব্রিজ, বাটা গেইট, স্টেশনরোড, মন্নু গেট, কামারপাড়া ব্রিজ, আইইউবিএটি ইউনিভার্সিটি ভবন, ক্যান্সার হাসপাতাল ও কামারপাড়া টু স্লুইসগেট এলাকা থেকে ড্রোনের মাধ্যমে পর্যেবক্ষণ করা হবে। ইজতেমা উপলক্ষে ময়দানের চারপাশের ১৯টি প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর স্থাপন করা হবে। আগত মুসল্লিদের ময়দানের নির্বিঘেœ প্রবেশের জন্য সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদে ভাসমান পন্টুন সেতু নির্মাণ করবেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের নির্দেশক্রমে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতি কাজ চলছে। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার ইজতেমা ময়দানে আগত দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অধিক তৎপর থাকবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণসহ বিভিন্ন অপারেশনাল কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।