শিরোনাম
॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : বোরোধান লাগানো নিয়ে কুমিল্লার গ্রামে গ্রামে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক কৃষাণীরা। কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। কেউবা আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত রয়েছেন। এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে কুমিল্লার ধান চাষের এলাকাগুলোতে।
কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় এক লক্ষ ৬৫ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ হবে এক লক্ষ ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে। হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হবে ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে। স্থানীয় জাতের ধান চাষ হবে ৩১ হেক্টর জমিতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াশা ঢাকা ভোর। দৃষ্টি আটকে যায় কয়েক হাত সামনের কুয়াশায়। বাড়ি সংলগ্ন ভিটায় (ছোট আকারের উঁচু জমি) ধানের চারা তুলছেন কৃষাণী ও পরিবারের শিশু-কিশোররা। পুরুষরা ঝুড়িতে ভরে মাথায় তুলে ধানের চারা নিয়ে যাচ্ছেন মাঠে। মাঠে শ্রমিকরা সার ছিটাচ্ছেন। কেউ চাষ দেয়া জমির ঘাস পরিষ্কার করছেন। ঘাস পরিষ্কার শেষে সারিতে লাগানো হচ্ছে ধানের চারা। হালকা হিমেল বাতাসে দুলছে সদ্য লাগানো ধানের চারা। দোল খাওয়া ধানের চারায় কৃষক দেখছেন আগামীর রঙিন স্বপ্ন। চারা বড় হবে, ফসলে ভরে উঠবে তার গোলা। দাউদকান্দির মরিয়ম নামের একজন কৃষাণী বাসসকে জানান, আমাদের মাঠে এক ফসল হয়। এ ফসল দিয়ে পরিবারের সারা বছরের খাবারের যোগান দিতে হয়। তাই বোরো মৌসুম এলে সময় মতো রান্না, খাবারের কথা ভুলে যেতে হয়। শুকনো খাবার চিড়া মুড়ি খেয়ে ভোরে কাজে নামতে হয়। নারীরা বেশিরভাগ সময়ে ধানের চারা তোলেন। পরিবারের পুরুষরা শ্রমিকদের সাহায্য করতে মাঠে চলে যান। কাজ শেষে নারীরা সকালের রান্না দুপুরে করেন।
চান্দিনার জোয়াগ এলাকার কৃষক আবু তাহের বলেন, বীজ ও সারের দাম এ বছর সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে । তবে পুরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ধান চাষ করে ভালো লাভ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, এখন বোরো লাগানোতে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক-কৃষাণীদের। কোনো সমস্যা না হলে হাইব্রিড প্রতি হেক্টরে ৪.১ মেট্রিক টন, উচ্চ ফলনশীল ৩.৯ মেট্রিক টন ও স্থানীয় জাতের ধান প্রতি হেক্টরে ২ মেট্রিক টন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।