শিরোনাম
রাজশাহী, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : রাজশাহীর বিস্তীর্ণ বরেন্দ্র অঞ্চলসহ জেলার প্রায় ৭১৫টি পরিত্যক্ত পুকুর এবং আরো ১০টি বড় পরিত্যক্ত জলাশয় পুন:খনন করা হবে। জলাশয়গুলোকে জমিতে সেচ ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার উপযোগী করার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খরা-প্রবণ অঞ্চলটিতে ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি বৃদ্ধিতে এই পদক্ষেপ বড় ধরনের অবদান রাখবে।
এছাড়াও এই পদক্ষেপটি ধীরে ধীরে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর থেকে চাপ হ্রাসে সহায়ক হবে এবং এর পাশাপাশি মানুষকে পানিতে একই সাথে মাছ চাষ ও হাসঁ পালনের মাধ্যমে এই সংরক্ষিত জলাশয়গুলোর সর্বোত্তম ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।
‘পুকুর পুন:খননের মাধ্যমে সেচকার্য ও ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির ব্যবহার বাড়ানো’- শীর্ষক এই প্রকল্পের আওতায় বরেন্দ্র মাল্টিপারপাস ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (বিএমডিএ) গত দুই বছর ধরে জলাশয়গুলো পুন:খনন করছে। এটি দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কোন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এ যাবতকালের মধ্যে সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহের সবচেয়ে বড় কাযক্রর্ম।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল হক বাসসকে বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পটি রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া ও নাটোর জেলার ৪৩টি খরা-প্রবণ উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১২৮ দশমিক ১৯ কোটি টাকা।
প্রকল্পটির আওতায় সেচকাজের জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার বাড়াতে ৮৫টি সৌর বিদ্যুত চালিত পাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৫টি সৌর চালিত পাম্প স্থাপন করা হয়ে গেছে।
প্রকল্পটির অংশ হিসেবে আবাদি জমিতে সেচকাজের জন্য ৮০ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ পাইপলাইনের নির্মাণ করা হবে। এদের মধ্যে ৪০টি সম্পন্ন হয়েছে।
খননকৃত পুকুর ও খালের পাড়ে ১ দশমিক ৫ লাখ চারাগাছ রোপন করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিবেশগত উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিকে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
প্রকল্পটির প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে- জলাশয়গুলোর পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও সংরক্ষিত জলাশয়গুলোর বহুমুখী ব্যবহার।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সফলভাবে সম্পন্ন হলে প্রকল্পটি ৩ হাজার ০৫৮ হেক্টর আবাদি জমিতে সেচ দিতে পারবে। আর এই জমিগুলো থেকে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন শস্য পাওয়া যাবে।
এছাড়াও, এই সংরক্ষিত জলাশয়ে অতিরিক্ত ১ হাজার ৮৮ টন মাছ চাষ হবে।
প্রকৌশলী হক বলেন, এর আগে বিএমডিএ গত জুন পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানি ভিত্তিক চাষের লক্ষ্যে আরো বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ৩ হাজার ৯৮টি পুকুর ও ২ হাজার ১১ কিলোমিটার খাল পুন:খনন করা হয়।