বাসস
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৩১

গোপালগঞ্জে ৬৯ হাজার ৭১৭ প্রবীণ নাগরিক পাচ্ছেন বয়স্ক ভাতা

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৭ ফেব্রুয়ারি,২০২৩ (বাসস): গোপালগঞ্জ জেলায় ৬৯ হাজার ৭১৭ প্রবীণ নাগরিক ঘরে বসেই মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাচ্ছেন  বয়স্ক ভাতা। এতে  দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বিশাল প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে  পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রবীণ জনগোষ্ঠী এভাতা পেয়ে আগের তুলনায় অনেক ভালো আছেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৬৯ হাজার ৭১৭ জন নর-নারী বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৭ হাজার ২৭০ জন, গোপালগঞ্জ পৌরসভায় ১ হাজার ১৯৫ জন, টুঙ্গিপাড়ায় ৬ হাজার ৫৩১ জন, কোটালীপাড়ায় ১৫ হাজার ৭০৬ জন, মুকসুদপুরে ১৬ হাজার ৯৮৯ জন কাশিয়ানী উপজেলায় ১২ হাজার ২৬ জন  বয়স্কভাতা ভোগ করছেন। এ ভাতা পেয়ে প্রবীণ জনগোষ্ঠী তাদের চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পারছেন। বয়স্ক ভাতা পেয়ে গোপালগঞ্জের প্রবীণ জনগোষ্ঠী খুব খুশি।    
গোপালগঞ্জ শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা ফারহানা নাসরিন বলেন, দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে ও পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  ‘বয়স্কভাতা’ কর্মসূচি প্রবর্তন  করেন। প্রাথমিকভাবে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়। পরবর্তীতে দেশের সকল পৌরসভা ও সিটিকর্পোরেশন এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত করা হয়।
ফারহানা নাসরিন বলেন, বর্তমানে বয়স্কভাতা কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো; ২০১৩ সালে প্রণীত বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, অধিক সংখ্যক মহিলাকে ভাতা কার্যক্রমের আওতায় অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে মহিলাদের বয়স ৬৫ বছর থেকে কমিয়ে ৬২ বছর নির্ধারণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয়  সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ এবং ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানান,২০১৭-২০১৮ অর্থবছর থেকে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির আংশিক এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে। বর্তমানে সকল উপকারভোগীকে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ ও বিকাশ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে জিটুপি পদ্ধতিতে (গভর্মেন্ট টু পারসন) ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
ভাতাভোগী গোপালগঞ্জ শহরের মান্দারতলা এলাকার খোকন শেখ বলেন, আয় করতে পারি না। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মেবাইলেই টাকা চলে আসে। এ ভাতার টাকা দিয়ে ওষুুুুুুুুুুুুুুুুুুুধ কিনে খাই। এছাড়া এ টাকা দিয়ে মাঝে মধ্যে পছন্দের খাবার কিনে খেতে পারি। ভাতা পাওয়ায় পরিবারে  মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বয়সে ভাতা পেয়ে বেশ ভালো আছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
গোপালগঞ্জ শহরের মৌলভীপাড়া এলাকার ভাতাভোগী নূরী বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাতার ব্যবস্থা করে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। ঘরে বসেই ভাতা পাচ্ছি। কোন হয়রাণী নেই। সংসারের দারিদ্রতা হ্রাস করতে এ ভাতা ভ’মিকা রাখছে। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হয়েছে। পরিবারে আমদের গুরুত্ব বেড়েছে। এ জন্য প্রতি ওয়াক্তে নামাজ পড়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া-মোনাজাত করি।
শহরের চরসোনকুড় এলাকার ভাতাভোগী ফুরি বেগম বলেন, আমি অসহায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বয়স্ক ভাতা আমার শেষ জীবনের বাঁচার অবলম্বন।  ঘরে বসেই ভাতা পাচ্ছি। কোথাও যেতে হচ্ছে না।  এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  জন্য  আল্লাহর কাছে দোয়া  করি ।