শিরোনাম
।। শাহাদুল ইসলাম সাজু।।
জয়পুরহাট, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : দেশি মুরগী পালন করে ভাগ্য বদলের পাশাপাশি সফলতার স্বপ্নও বুনছেন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করা এক বিধবা নারী সুফিয়া বেগম।
জীবন যে কত কঠিন তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন সুফিয়া। একদিকে করোনা প্রাদুর্ভাব অন্যদিকে, কর্মক্ষম স্বামীকে হারিয়ে সংসারে দুই মেয়েকে নিয়ে যখন দিশেহারা তখন খুঁজে পান নিজেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ। ২০২০ সালের নভেম্বরে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জেআরডিএম থেকে বিনামূল্যে মুরগী পালনের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে এক হাজার দেশি মুরগীর বাচ্চাসহ মুরগী পালনের উপকরণ প্রদান করা হয় বিনামূল্যে। সেখান থেকে শুরু হয় সুফিয়া বেগমের ঘুরে দাঁড়ানো ও সামনে পথচলা। নিজের মুরগীর খামার থেকে এখন বাণিজ্যিক ভাবে ডিম ও মুরগী বাজারে বিক্রি করে সংসারে স্বচ্ছলতার পাশাপাশি দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন।
কথা হয় জীবন সংগ্রামে হার না মানা সুফিয়া বেগমের সঙ্গে তিনি জানান, স্বামীর পান বিড়ির দোকন থেকে কোনমতে খেয়ে না খেয়ে সংসার চললেও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া কঠিন হয়ে পড়ে। তারপরে স্বামীর মৃত্যু হলে যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে মাথায়। এ অবস্থায় স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জেআরডিএমের সহযোগিতায় শুরু হয় ঘুরে দাঁড়ানোর জীবন সংগ্রাম। বর্তমানে খামারে মুরগীর সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। প্রতিদিন ডিম ও মুরগী বিক্রি করে থাকেন। অনেক সময় পাইকার এসে খামার থেকেই মুরগী ও ডিম নিয়ে যায়। দেশি মুরগী পালন করে শুধু স্বাবলম্বী নয় এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। অনেকে সুফিয়া বেগমের মুরগী পালনে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বল্প পুঁজিতে গড়ে তুলছেন খামার। স্বল্প পুঁজিতে দেশি মুরগী পালন করা যায় আবার বাড়তি কোন ঝামেলাও নেই। বাড়ির বাইরে ছেড়ে দিলে ঘাস পোকা মাকড় খেয়ে থাকে। তুলনামূলক রোগ বালাইও কম। সে কারণে দেশি মুরগী চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন সুফিয়া বেগম। জেআরডিএমের সহায়তায় সুফয়া বেগম ছাড়াও আরও ৭৬টি অসহায় পরিবার বিনামূল্যে প্রশিক্ষণসহ মুরগী লালন পালন করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এনছেন বলে জানান, জেআরডিএমের নির্বাহী পরিচালক রাজিয়া সুলতানা। সোনালী, বয়লার, কর্কসহ অন্যান্য মুরগী ী পালন করলেও দেশি মুরগীর অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। সে কারণে দেশি মুরগী পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মাহফুজার রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় ছোট বড় তিন শতাধিক দেশি মুরগীর খামার রয়েছে। দেশি মুরগী পালন উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গুলোও নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।