শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০২৩-এর আওতায় ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার সবক’টি উপজেলা মিলে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ৫ লাখ ৩৬ হাজার এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৮ লাখ ৪ হাজার ৫৬৪ এ ক্যাম্পেইনের আওতায় আসবে।
এ উপলক্ষে আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী এ তথ্য জানান।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্ববধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি সেবার বাস্তবায়নে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় কর্মশালার আয়োজন করে।
জেলা পর্যায়ে ঐ দিন সকাল ৮টায় হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেলা পর্যায়ের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হবে। ক্যাম্পেইন চলাকালীন জেলার ১৫ উপজেলায় ২শ ইউনিয়নের ৬শ ওয়ার্ড, ১৬টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮শ অস্থায়ী কেন্দ্রে মোট ৮ লাখ ৪ হাজার ৫৬৪ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ৯১ হাজার ৯১৮ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আইইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ১২ হাজার ৬৪৬ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আইইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ৫ লাখ ৩৬ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তন্মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৮১ হাজার শিশু একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ৫৫ হাজার শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল পাবে।
এ ক্যাম্পেইন সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপজেলাগুলোতে ৫৪ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ২০০ সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৪০ স্বাস্থ্য সহকারী, ৭৪৮ পরিবার পরিকল্পনা সহকারী, ১৯৬ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, ৫১১ জন সিএইচসিপি ও ৮৫ জন স্যাকমো জাতীয় ক্যাম্পেইনে নিয়োজিত থাকবে। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।
সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী জানান, বিগত ২০২২ সালের ১৫-১৯ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৮৮ হাজার ৪৭৬ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ৯৮ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট ৬ লাখ ৮০ হাজার ১৬২ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ৯৭ শতাংশ।
তিনি আরও জানান, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়ারিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্র্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ খাবার খেতে দিতে হবে। কোন শিশু যাতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে বাদ না পড়ে সে লক্ষ্যে সর্বত্র মাইকিং করে জনগণকে জানান দেয়া হবে। ভ্রমণে থাকাকালীন সময়েও রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, ফেরী ঘাট ও লঞ্চ ঘাটে অবস্থিত টিকা কেন্দ্রসহ যে কোন টিকাদান কেন্দ্র থেকে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবে। ৬-৫৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে ৪ মাস অন্তর অন্তর ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখতে সরকারি প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলো কাজ করবে। সরকারি কর্মকর্তা, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শিশুদেরকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে।