শিরোনাম
// মনোজ কুমার সাহা //
টুঙ্গিাপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস): জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অতিরিক্ত ২৫৯ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। গম চাষে খরচ কম। বাজারে গমের দাম ভাল। কৃষিবিভাগ গম চাষে প্রণোদনা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে। তাই কৃষক অধিক জমিতে গমের আবাদ করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবড়ি সূত্র জানিয়েছে, জেলার ৫ উপজেলায় ৫ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কৃষক উৎসবের আমেজে ৫ হাজার ৩৪৪ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত ২৫৯ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ গমের বাম্পার ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
ওই সূত্র জানান, সদর উপজেলায় ৪২৫ হেক্টরে, মুকসুদপুরে ৪ হাজার ২২৫ হেক্টরে, কাশিয়ানীতে ৪৭২ হেক্টরে, কোটালীপাড়ায় ১৩৭ হেক্টরে ও টুঙ্গিপাড়ায় ৮৫ হেক্টরে গমের আবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আ. কাদের সরদার বলেন, আমরা কৃষককে প্রণোদনার বীজ, সার ও ছত্রাক নাশক দিয়েছি। সেই সাথে গমের প্রদর্শণী প্লট করেছি। বাজরে গমের দাম ভাল রয়েছে। তাই অধিক লাভের আশায় কৃষক গমের আবাদ করেছে। অন্য ফসলের তুলনায় গম আবাদে খরচ কম লাগে। তাই গমের অধিক ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হন। আশা করছি এই বছর গমের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ডাঙ্গাদুর্গাপুর গ্রামের কৃষক জব্বার মিয়া (৫৫) বলেন, আমাদের এলাকায় বরাবরই গম ভাল হয়। তাই এই বছর ১ একর জমিতে গমের আবাদ করেছি। এতে কৃষি বিভাগ আমাকে প্রণোদনার বীজ, সার ও ছত্রাক নাশক দিয়েছে। সেই সাথে কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে আসছেন পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের পরামর্শে কাজ করছি। মাঠে গম ভাল দেখা যাচ্ছে। গম দেখে মনে হচ্ছে ভাল ফলন পাব।
কাশিয়ানী উপজেলার হিরণ্যকান্দি গ্রামের কৃষক ফরাস উদ্দিন (৫০) বলেন, আমি ২ একরে গমের আবাদ করেছি। বাজারে গমের দাম ভাল আছে। ক্ষেতেও গমের অবস্থা বেশ ভাল। ভালভাবে গম কেটে ঘরে তুলতে পারলে এই বছর গম থেকে ভাল টাকা পাব।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের কৃষক ফজর আলী ভূইয়া (৫২) বলেন, এই বছর মাঠে গমের অবস্থা ভাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গম আবাদ করেছি। আশা করছি বাম্পার ফলন পাব। এতে আমদের খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে ইন্শাল্লাহ ।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, আমরা কৃষকদের দিয়ে বিএডিসি, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের গমের চাষাবাদ করিয়েছি। তারা আমাদের পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গমের চাষাবাদ করেছে। এখানে তারা পরিমিত সার, কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক ব্যবহার করেছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় সেচ দিয়েছেন। তাই গমে রোগ বালাই কম হয়েছে। গম চাষে কৃষকের তুলনা মুলকভাবে খরচ কম লেগেছে। ক্ষেতে গমের ফলন ভাল দেখা যাচ্ছে। আশা করছি কৃষক গমের বাম্পার ফলন পাবেন। গম থেকে কৃষক বাড়তি আয় করতে পারবেন। আগামী বছর লাভজনক গমের চাষাবাদ কোটালীপাড়া উপজেলায় আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশা করছি।