বাসস
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:১৬

সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে কাল প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ব্রি 

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস):  সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ১১১টিরও বেশি আধুনিক ধানের জাত উন্নয়নসহ ৫০ বছরের উদ্ভাবন সাফল্য তুলে ধরার মাধ্যমে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্যাম্পাসে স্বাগত জানানোর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।
আজ এখানে ব্রি’র কর্মকর্তাগণ জানান, দেশের কৃষি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ব্রি দিবসটি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দু’দিনের বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন এবং তিনি গাজীপুরে ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন।
এই  উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল সকাল ১১ টা ২৫ মিনিটে ব্রি’তে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র’ উদ্বোধন করবেন।
টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বে সহযোগিতার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুসারে ব্রি’তে প্রযুক্তি কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। ।
পরে, প্রধানমন্ত্রী  ব্রি’র  গত ৫০ বছরে গর্ব ও সাফল্যের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বেলুন ও পায়রা উড়াবেন।
প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ, ব্রি ল্যাবরোটরিজ পরিদর্শন, ব্রি’র বিভিন্ন উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন এবং ‘ধান কাব্য’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে ‘ব্রি’র গর্ব ও সাফল্যের ৫০ বছর’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।
সকাল ১১টায় ব্রি হেলিপ্যাডে পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
ব্রি-এর ৫০ বছরের সাফল্যের তাৎপর্য নিয়ে বাসসের সঙ্গে আলাপকালে ব্রি মহাপরিচালক ড. এম শাহজাহান কবির বলেন, “বাংলাদেশ এক সময় ছিল দীর্ঘস্থায়ী খাদ্য ঘাটতির দেশ, কিন্তু এখন ধান বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে।”
স্বাধীনতা অর্জন আমাদের মহান সাফল্য এবং একই সাথে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনও আমাদের আরেকটি যুগান্তকারী সাফল্যের বিষয় উল্লেখ করে ডিজি বলেন, ‘এখন আমরা ২০৫০ সাল পর্যন্ত একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি, যাতে দেশে আর কখনই খাদ্য ঘাটতি না হয়।’
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অফ ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস), কানাডার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন ওয়েব, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইআরআরআই), ফিলিপাইনের মহাপরিচালক জিন বালফে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বকতিয়ার এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. এম শাহজাহান কবিরসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আগামীকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। 
ব্রি এ পর্যন্ত ১১১টি ধানের আধুনিক জাত উদ্ভাবন ও অবমুক্ত করেছে, ১০৪টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড। এর মধ্যে ২৪টি বিভিন্ন সহিষ্ণু জাত, যার ১০টি লবণাক্ত সহিষ্ণু, তিনটি নিমজ্জন সহিষ্ণু, তিনটি খরা সহিষ্ণু, চারটি শীত সহিষ্ণু, দু’টি জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু, একটি আধা-গভীর জল এবং একটি দ্বৈত সহিষ্ণু (সাল+সাব)।
এছাড়াও, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ১৩টি প্রিমিয়াম মানের, পাঁচটি  জেডএন-সমৃদ্ধ এবং তিনটি নিম্ন জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) ধান তৈরি করা হয়েছে। জানা গেছে, দেশের মোট ধানি জমির ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্রি ধানের উৎপাদন করা হয়েছে এবং জাতীয় ধান উৎপাদনে এর অবদান  প্রায় ৯১ শতাংশ।
স্বাধীনতার পর থেকে জনসংখ্যা আড়াই গুণ বাড়লেও ধানের উৎপাদন সাড়ে তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন কৃষিবান্ধব সরকারের দৃঢ় সমর্থনের কারণে ধান বিজ্ঞানী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী এবং কৃষকদের সাফল্যের গল্প ফুটে উঠেছে।
বাংলাদেশ ২০১৩ সালে চাল রপ্তানি শুরু করে এবং এই অসাধারণ অর্জনের পিছনে মূল অবদান রয়েছে যে প্রতিষ্ঠানের সেটি হল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।