বাসস
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৩১

ভোলার দুটি অভায়শ্রমে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রচারণা চলছে

॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : জেলার ইলিশের দুটি অভায়শ্রমে আগামী এক মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা দুই মাস মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম বাস্তবায়নে জেলেদের মাঝে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকার দুটি অভায়শ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মৎস্য শিকার বন্ধ থাকবে। এতে করে জাটকা (ছোট ইলিশ) রক্ষাসহ অনান্য সব ধরনের মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এর মধ্যে মেঘনা নদীর চর ইলিশা থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এলাকায় একটি অভায়শ্রম ও অন্যটি তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত ১’শ কিলোমিটার এলাকা। ভোলার দুটি অভায়শ্রমসহ দেশের মোট ৬টি অভায়শ্রমে একইসময় থেকে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে।
এদিকে মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে প্রতিদিনই স্থানীয় হাট-বাজার, জেলে পল্লী-মাছ ঘাট ও মৎস্য আড়ৎগুলোতে জেলেদের নিয়ে সচেতনতা সভা চালানো হচ্ছে। জেলেদের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানান দিতে ব্যানার, পোষ্টার, লিফলেট, মাইকি এর মাধ্যমে প্রচার চলছে। এ সময়ে জেলেদের গ্রহণ করা ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখার জন্য এনজিওগুলোকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। 
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ বাসস’কে জানান, মূলত জাটকা রক্ষার জন্য এ  দুই মাসের অভায়শ্রমে মৎস্য শিকারে নিষোজ্ঞা কার্যকর থাকবে। অক্টোবরে যে ছোট ইলিশের বাচ্চা হয়েছে তা এখোনো নদীতে আছে। এরা সাধারণত ছয় মাস নদীতে থাকে। এদের বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে এ দুই মাস খুবই গূরুত্বপূর্ণ। কারণ এর পর এপ্রিলের দিকে ইলিশ সমুদ্রের দিকে যেতে থাকে। তাই অভায়শ্রমে এসময়টাতে ইলিশ নির্বিঘেœ বেড়ে উঠার সুযোগ পায়। 
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, শুধু জাটকা নয়, একইসাথে অনান্য সকল মাছের বাচ্চারা অভায়শ্রমে বৃদ্ধি পাবে। অভায়শ্রমে থেকে দু মাস মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলে ইলিসসহ সব প্রকারের মাছের প্রাচুর্যতা বাড়বে ভোলায়। আমরা জেলেসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এ বিষয়ে সচেতনতা সভা ও অনান্য প্রচার প্রচারণা করছি। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিদিনই সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে জেলেদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আড়ৎদার ও মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দা উপস্থিত থাকছেন। 
মৎস্য বিভাগ জানায়, গত অর্থবছর জেলায় মোট ইলিশের উৎপাদন হয়েছিলো ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন। যা দেশের মোট ইলিশ উৎপাদনের ৩৩ ভাগ। এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিকটন। অভায়শ্রমে মার্চ-এপ্রিলের নিষেধাজ্ঞা সফল করা গেলে ইলিশ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা। 
মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ আরো বলেন, আজকের ছোট ইলিশই আগামীর বড় ইলিশ। সঠিক রক্ষাণাবেক্ষণের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাই জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। অভায়শ্রমে মৎস্য শিকার বন্ধে নদীর পাশাপাশি বাজারগুলোও আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। সব মিলিয়ে অভায়শ্রমে জাটকাসহ অনান্য সকল মাছ রক্ষায় অভিযান সফল করতে বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা জানান জেলার প্রধান এ মৎস্য কর্মকর্তা।