বাসস
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩৭

আর্জেন্টিনাকে বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের কারখানা স্থাপনের আহ্বান

ঢাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : আর্জেন্টিনাকে বাংলাদেশের যেকোনো অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভোজ্যতেলের কারখানা স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন,‘ বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল ও চিনি আমদানি করে থাকে। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভোজ্যতেলের কারখানা স্থাপন করলে তুলনামূলক কম দামে ভোজ্যতেল সরবরাহ করতে পারবে এবং একইসঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে রপ্তানি করাও সম্ভব।’
মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের আগে দেশটির সফররত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ অনুরোধ করেন টিপু মুনশি।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে আর্জেন্টিনার সাথে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। সচিবালয়ে চুক্তিতে সাক্ষর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আর্জেন্টিনার সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।’
আশা করা হচ্ছে, এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে দুই এক বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এক থেকে দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কোসুর গ্রুপের সদস্যদেশ হিসেবে আর্জেন্টিনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মার্কোসুর গ্রুপের সদস্য চারটি দেশে প্রায় ২৭ কোটি মানুষ। এ দেশগুলোর মানুষের মাথাপিছু আয়ও অনেক বেশি। এ বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ এ সুযোগকে কাজে লাগাতে চায়।
অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এতদিন দুই দেশের মধ্যে ফুটবলকে কেন্দ্র করে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। এখন ব্যবসায়িক সম্পর্কসহ অন্যান্য সম্পর্কে যাবে দুই দেশ।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর আর্জেন্টিনা থেকে বাংলাদেশ ৭৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ৪৮৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে।
আর্জেন্টিনা থেকে প্রধানত সয়াবিন তেল, চিনি আমদানি হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানি হয় সামান্য। তবে দেশটি থেকে সুর্যমুখী তেল, গম আমদানির সুযোগ রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘এই এমওইউর ভিত্তিতে কিছুদিন পরে টিসিবির সাথে আর্জেন্টিনার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরেকটি এমওইউ হবে, যার ভিত্তিতে টিসিবি সরাসরি আমদানি করতে পারবে।"
এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি কর্মীরা ভিসা ছাড়া আর্জেন্টিনা ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। ভবিষ্যতে সাধারণ নাগরিকরাও অন অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা পেতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার মন্ত্রী টিপু মুনশিকে তাদের জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি, অলিভ অয়েল, আচার উপহার দেন।
অন্যদিকে টিপু মুনশি আর্জেন্টিনার মন্ত্রীকে পুরনো দিনের ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ছবি, পাট ও চামড়ার কিছু পণ্য উপহার দেন।
এদিকে, দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে আর্জেন্টিনা ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দূতাবাস চালু করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সিচিব তপন কান্তি ঘোষের সঞ্চালনায় এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সফররত আর্জেন্টিনার ফরেইন এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড মিনিস্টার এর ডেলিগেশনের সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) নূর মো. মাহবুবুল হক, মো. হাফিজুর রহমান এবং সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।