বাসস
  ০১ মার্চ ২০২৩, ২২:০৭

অশুভ শক্তির বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টাকে নির্মূল করতে পুলিশ কাজ করছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা, ১ মার্চ, ২০২৩(বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী অশুভ শক্তির বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টাকে নির্মূল করতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জনগণের জানমাল রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট ও নিবেদিত রয়েছেন। করোনাকালে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা যে চরম ধৈর্য ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন তা সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছে। 
রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ কনভেনশন হলে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আজ পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩। প্রতি বছরের মত এবারও কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী বীর পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা ও স্মরণের মধ্য দিয়ে পালিত হলো পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩। এ উপলক্ষে ২০২২ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী ১২১ জন পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গকে স্বীকৃতি স্মারক প্রদান করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি এ লক্ষ্য অর্জনে পুলিশের সকল সদস্যকে সততা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান। 
পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকাল ১০টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবার রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ চত্বরে স্থাপিত পুলিশ মেমোরিয়ালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান। এসময় একটি সুসজ্জিত পুলিশ দল সশস্ত্র সালাম প্রদান করে। বিউগলে বেজে উঠে করুন সুর।
পরে পুলিশ স্টাফ কলেজ কনভেনশন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে স্বীকৃতি স্মারক প্রদান করা হয়।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাজহারুল ইসলাম।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ২০২২ সালে ১২১ জন পুলিশ সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন, এটা অনেক বড় সংখ্যা। পুলিশকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। 
আইজিপি বলেন,‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশমাতৃকার সেবায় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। পুলিশ সদস্যরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও কুন্ঠাবোধ করেনা। তিনি বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালনকালে নিহত পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগ আমাদেরকে আগামী দিনে আরও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনে উজ্জীবিত করবে, আমাদের কর্মস্পৃহাকে আরও শানিত করবে।’
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৫ কোটি টাকা সিড মানি দিয়ে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট স্থাপন করে দিয়েছেন। পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের আয় থেকেও জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, র‌্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবার উপস্থিত ছিলেন।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব এবং আইজিপি মঞ্চ থেকে নেমে দর্শক সারিতে এসে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী দশজন পুলিশ সদস্যের পরিবারের হাতে সম্মাননা স্মারক ও উপহার তুলে দেন। 
২০২২ সালে জীবন উৎসর্গকারী বাকি পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে মেট্রোপলিটন, রেঞ্জ এবং জেলায় সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে।
পুলিশের সকল মেট্রোপলিটন, রেঞ্জ এবং জেলা ইউনিটেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ পালিত হয়েছে।
জীবন উৎসর্গকারী ১২১ জন পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ইন্সপেক্টর-টিআই সাত জন, সাব-ইন্সপেক্টর-টিএসআই ২২ জন, এএসআই-এটিএসআই ১৬ জন, নায়েক পাঁচ জন ও ৭১ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন  উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে'’ পালিত হচ্ছে।