শিরোনাম
হবিগঞ্জ, ৪ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : নিত্য নতুন ফসল আবাদ এবং রাসায়নিক সার ও বিষ প্রয়োগ না করে আলোচিত জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক বদু মিয়ার জমিতে এবার ভালো ফলন হয়েছে জিংক আলু। আবার রমজানকে সামনে রেখে বিস্তীর্ণ জমিতে আবাদ করেছেন হরেক রকম ফসল। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার অজপাড়া গ্রাম গোপিনাথপুর এখন সবুজের সমারোহ।
বিদেশী ও ব্যাতিক্রম ফসল আবাদ করে তাক লাগানো বদু মিয়া এ বছর বাজিমাত করেছেন জিংক আলু বা কাল রংয়ের আলু আবাদ করে। কৃষক বদু মিয়া জানান, দুই বছর আগে বিএডিসিরি কর্মকর্তা রেজাউল করিম এর কাছ থেকে তিনি জিংক আলুর বীজ সংগ্রহ করেন। হল্যান্ডে এ আলুর আবাদ করা হয়। অত্যন্ত পুষ্টিকর এ আলু বাংলাদেশে তিনিই প্রথম আবাদ করেছেন। বীজের অভাবে এবছর মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন এ আলু। ফলন হয়েছে ৪০মণ। ঘরে আনার আগেই শেষ হয়েছে বিক্রি।
কৃষক বদু মিয়া জানান, জিংক আলু উৎপাদন করার পর ৬০টাকা কেজি দরে আগাম বিক্রি হয়ে যায় সব আলু। নাফকো কোম্পানী ১০ মণ হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ও মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ৩মণ করে এ আলু ক্রয় করেন।এ উৎপাদিন আলু দেখতে ও কিনতে অনেকেই তার বাড়ি ও খামারে ভিড় জমান। আগামীতে আরও বেশী পরিমাণ জমিতে এ আলু আবাদ করার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।
জিংক আলু নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্যবৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল কুন্ড জানান, বারিতে এ জাত আছে। এটি জিংক এবং আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এটি শিক্ষিত সমাজে সমাদৃত হলেও সাধারণ মানুষ এখনও এটি পছন্দ করেনা। কারণ এর রং কাল এবং রান্না করলে গলে যায়। তবে বিদেশীরা এটিকে হাল্কা সিদ্ধ করে সালাদ করে খায়। আমাদের দেশেও একসময় এটি জনপ্রিয় হবে। কৃষক বদু মিয়া এ আলু আবাদ করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
এদিকে বদু মিয়া রমজানকে সামনে রেখে তার জমিতে লাগিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের ফসল। এর মাঝে ইন্ডিয়ান গ্রীণ ব্ল্যাক ক্যাপসিকামে ভরে গেছে মাঠ। রমজানের কয়েকদিন আগে থেকেই এ ফসল বাজারে নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বদু মিয়া। বাহুবলী ও বিউটিফুল টমেটোও পাকতে শুরু করেছে। সাম্মাম গাছে ফল ধরেছে। পুরো রমজান মাসেই বিক্রি হবে বেগুন। শশার ফলনও পুরো রমজান চলবে। আবার ঈদকে সামনে রেখে আলাদ করে আবাদ করা হয়েছে শশা।
এ ব্যাপারে কৃষক বদু মিয়া জানান, গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ফসল আসা এবং পরিপক্ষ হওয়ার জন্য যে সময় প্রয়োজন সেই সময়কে হিসাব করে রমজান মাসকে টার্গেট করে ওই সময়ে যে ফসলের চাহিদা বেশী থাকে সেই ফসল বেশি করে আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া যাতে ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য সেচ ও গ্রীণ হাউজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ফসল থেকে ভালো লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিরি আরও জানান, এ বছর জিংক আলু, ডায়মন্ড আলু, দেশী আলু, মিস্টি আলু, পার্পাল ভুট্টা টমেটোসজ বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলিয়ে লাভবান হয়েছে। বিষমুক্ত হওয়ায় লোকজন তার বাড়িতে এসেই তা কিনে নেন।