বাসস
  ০৫ মার্চ ২০২৩, ১০:১৪

স্ট্রবেরী চাষে সফল গোপালগঞ্জের দিলীপ

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৫ মার্চ ২০২৩ (বাসস) : স্ট্রবেরী চষে সফল গোপালগঞ্জের চাষি দিলীপ কুমার রায়। তিনি গত ১২ বছর ধরে স্ট্রবেরী চাষ করে আসছেন। কুয়েত ফেরত দিলীপ ভালোভাবে স্ট্রবেরী চাষ রপ্ত করেছেন।এ  বছর তিনি ১০ শতাংশ জমিতে স্টবেরীর চাষ করেন। এ পর্যন্ত তিনি ১০ শতাংশ জমি থেকে ৫০ হাজার টাকা স্ট্রবেরী বিক্রি করেছেন। আরো ২৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরী তিনি বিক্রি করবেন বলে জানান। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) প্রণোদনার চারা, সার ও পরামর্শ পেয়ে তিনি  এ বছর স্টবেরীর চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলুবীজ হিমাগারের উপপরিচালক কৃষিবিদ  দিপংকর রায় বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ‘জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি বীজ উন্নয়ন ও বর্ধিত করণ প্রকল্পের’ আওতায়  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক দিলীপ কুমার রায়কে স্ট্রবেরী চাষের একটি প্রদর্শনী  দেওয়া হয়। তিনি ১০ শতাংশ জমিতে গত বছরের ৯ নভেম্বর স্টবেরীর চাষাবাদ করেন। আমরা তাকে প্রণোদনার চারা, সার প্রদান করেছি। সেই সাথে দিয়েছি পরামর্শ। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তিনি স্টেবেরীর ফলন পেতে শুরু করেছেন। চলতি মার্চ মাস পর্যন্ত এ দর্শনী প্লট থেকে তিনি স্টবেরীর ফলন পাবেন। প্রতি শতাংশে স্ট্রবেরী ২২ থেকে ২৫ কেজি ফলন দেয়। এক শতাংশ  জমিতে স্টবেরী চাষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। খরচ বাদে স্টবেরীতে প্রতি শতাংশে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। তাই লাভজনক স্ট্রবেরী চাষ সম্প্রসারিত হলে কৃষক লাভবান হবেন। কৃষক লাভবান ও স্ট্রবেরী চাষাবাদ সম্প্রসারিত হলেই এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্বার্থক হবে। 
গোপালগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত  ১০ বছর কুয়েতে ছিলাম। সেখানে উজারাতুল হায়াত ও আলাগাতানী স্টীল কোম্পানীতে চাকরি করেছি। তাদের গ্রিণ হাউসে স্ট্রবেরী, টমেটো, শশা, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটিসহ বিভিন্ন ফসল ফলিয়েছি। দেশে আসার পর বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলু বীজ হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমাকে দিয়ে স্ট্রবেরীর চাষ করাচ্ছে। আমি ১২ বছর ধরে স্টবেরীর চাষ করছি। স্ট্রবেরীর চাষ করে আমি লাভবান হয়েছি। 
ওই কৃষক বলেন, এ বছর  ১০ শতাংশ জমিতে স্টবেরীর চাষ করেছি। এ পর্যন্ত  ১০ শতাংশ জমি থেকে ৫০ হাজার টাকার স্ট্রবেরী বিক্রি করেছি। আরো ২৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরী তিনি বিক্রি করব। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে স্ট্রবেরী সংগ্রহ শুরু করি। প্রথম দিক দিয়ে প্রতি কেজি স্টবেরী ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এখন ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। অনেক ক্রেতারা ক্ষেতে এসেই স্টবেরী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) প্রণোদনার চারা, সার ও পরামর্শ পেয়ে  এ বছর স্টবেরীর চাষ করে লাভবান হয়েছি। আগের বছরগুলোতেও আমি স্ট্রবেরী চাষ করে লাভবান হয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমাকে একটি গ্রীণ হাউস করে দিলে আমি প্রায় সারবছর স্ট্রবেরীর চাষ করতে পারব। আমার দেখাদেখি আরো অনেক  চাষি গ্রিণ হাউস করে স্ট্রবেরীসহ শাক সবজি চাষে এগিয়ে আসবেন। এতে আমাদের কৃষি সমৃদ্ধ হবে।  
গোপালগঞ্জ শহরের ফল বিচক্রেতা রতন সাহা বলেন, রঘুনাথপুরের স্টবেরী জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা ১১০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা কেজি দারে বিক্রি করেছি। এখন বাজারে থাইল্যান্ডের স্টবেরী এসেছে। ওই স্ট্রবেরী ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু রঘুনাথপুরের স্ট্রবেরী ক্রেতারা ৮০০ টাকা দরে কিনছেন। কারণ ওই স্ট্রবেরীর স্বাদ ও গুণগত মান খুবই ভালো ।
স্ট্রবেরী ক্রেতা গোপালগঞ্জ শহরের নুসরাত জাহান  বলেন, গোপালগঞ্জের দিলীপের উৎপাদিত স্টবেরীর স্বাদ  ভালো। এ স্টবেরী মান সম্পন্ন। তাই একটু বেশি দামে এ স্ট্রবেরী আমরা ক্রয় করছি। বিভিন্ন খাবারের সাথে এ স্ট্রবেরী আমরা ব্যবহার করছি। আবার সরাসরি এ স্ট্রবেরী আমরা খাচ্ছি।