শিরোনাম
।। কামাল আতাতুর্ক মিসেল।।
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ৬ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : কুমিল্লা বিমানবন্দর নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। দেশের পর্যটন খাতের বিকাশ ও যাত্রী পরিবহণ বাড়াতে কুমিল্লাসহ দেশের আরও ৭টি পুরাতন বিমান বন্দরকে নতুন করে চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাজ শুরু হয়েছে। কুমিল্লা ছাড়াও অন্য যেসব বিমান বন্দরগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেগুলো হলো ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, বগুড়া, শমসেরনগর ও তেজগাঁও বিমানবন্দর। বেবিচকের ২০৩০ সালের কর্মপরিকল্পনা এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানা গেছে, কুমিল্লা বিমানবন্দর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে চালু ছিল। ১৯৯৪ সালে এটি পুনরায় চালু করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় দুই সপ্তাহের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ অঞ্চলে দ্রুত শিল্পায়নের ফলে বিমান চলাচলের চাহিদা বদলেছে। তাছাড়া এ জেলায় একটি ইপিজেড থাকলেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রাজধানী থেকে সহজে সেখানে যেতে পারেন না।
কুমিল্লা বিমান বন্দর সূত্রে জানা যায়- কুমিল্লা বিমানবন্দর এখনো চালু অবস্থাতেই আছে। শুধু বিমান ওঠা নাম করে না। এ বিমান বন্দর থেকে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী সব বিমানকে আসার পথের সিগন্যাল দেয়া হয়। আর এ কাজ করে কুমিল্লা বিমান বন্দর প্রতি মাসে আয় করে বিপুল পরিমান অর্থ। কুমিল্লা বিমান বন্দরে নেভিগেশন ফ্যাসিলিটিজ, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন, যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিসহ সব সুবিধা রয়েছে।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ৯০-এর দশকে যখন কুমিল্লা বিমানবন্দর ফ্লাইট স্থগিত করেছিল, তখন যানজট বলতে কিছুই ছিল না। কিন্তু এখন দুই ঘণ্টা সময়েও ঢাকা থেকে সড়কপথে কুমিল্লা পৌঁছানো যায় না। অথচ ফ্লাইটে মাত্র ২৫ মিনিটে কুমিল্লা যাতায়াতের সুবিধা মিলবে। বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে চাঁদপুর ও ফেনী অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার আরও ভালো সংযোগ তৈরি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদ উল আলম বলেন, সড়কে যানবাহনের চাপ প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। এ কারণে বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলো আবার চালু করা গেলে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো অবশ্যই ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, যাত্রী আছে এবং তারা বিমান ভ্রমণের জন্য খরচ করতেও প্রস্তুুত। আমাদের প্রথম কাজই হবে এয়ারফিল্ডগুলোকে ব্যবসায় ফিরিয়ে আনা।
কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদ পারভেজ ইমরান বলেন, বিদেশি ক্রেতারা ঘন ঘন ইপিজেডে আসছেন। এছাড়াও অন্যান্য শিল্প ও পর্যটন বিকাশ লাভ করছে। বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় মানুষ যাতায়াত সমস্যায় পড়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আবদুল গণি বলেন, প্রতিদিন আমাদের সিগন্যাল ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক রুটের ৩৫ থেকে ৪০টি বিমান। এতে মাসে ৩০ লাখ টাকার মতো আয় করছি। কুমিল্লা বিমানবন্দরে সবকিছুই আছে। শুধু উদ্যোগের অভাবে এখানে বিমান উঠানামা করে না। বর্তমানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা, ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতিসহ আমাদের এখানে ২০ জন কর্মরত রয়েছেন। উদ্যোগ নিলেই বিমানবন্দরটি সচল করা সম্ভব। এজন্য রানওয়ে মেরামতসহ কিছু কাজ করতে হবে। পাশাপাশি আরও ২০-২২ জন লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। আমরা চাই দ্রুত বিমানবন্দরটি চালু করা হোক।