শিরোনাম
॥ এস এম মজিবুর রহমান ॥
শরীয়তপুর, ১৫ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় শরীয়তপুর জেলা পরিষদের পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে করছে অনুপ্রাণিত। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারের অনুপ্রেরণায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শামীম হোসেনের আন্তরিকতায় বিভিন্ন রাস্তার পাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সামাজিক প্রতিষ্ঠানে, নদীর পাড়ে, খালের ধারে ২০২০ সাল থেকে এ যাবৎ রোপণ করা হয়েছে ফল, ফুল, ওষুধি ও পরিবেশ সহায়ক ৪২ হাজার গাছের চারা। এ ছাড়াও জেলা পরিষদের ছাদ ও আঙ্গিনাকে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ফল, ফুল ও সবজির সমাহারে। যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা’র এক ইঞ্চি জামিও অনাবাদি না রাখার ঘোষণাকে বাস্তবে রুপ দান করেছে। এর মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এখন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও চলছে বৃক্ষ রোপণ। জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই আশাবাদী জেলার পরিবেশ রক্ষার এ প্রয়াস শরীয়তপুরকে করে তুলবে প্রকৃতিব্ন্ধাব পরিবেশ সহায়ক অন্যতম জেলা।
শরীয়তপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শামীম হোসেন বাসস’কে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাকে বৃক্ষ রোপণে অনুপ্রেরণা যোগিয়েছে। ২০১২ সালে বান্দরবনে সহকারি কমিশনার থাকাকালীন সময় থেকেই আমি জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় পরিবেশ সহায়ক গাছ রোপণ ও বিতরণ করে আসছি। ২০১২-১৪ সালে বান্দরবনে এনডিসি হিসেবে ৮০ হাজার, ২০১৪-১৫ সালে কুমিল্লায় সহকারী কমিশনার ভূমি হিসেবে ৩৮ হাজার, ২০১৫-১৬ সালে একই পদে থেকে লক্ষীপুরে ৪০ হাজার, ২০১৬-১৯ সাল পর্যন্ত রাউজানের উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ৫ লক্ষ বৃক্ষ রোপণ ও বিতরণ করেছিলাম। ওই সময় রাউজন উপজেলা বৃক্ষরোপণে স্বর্ণপদক পেয়েছিল। ২০২০ সালে শরীয়তপুর জেলা পরিষদে যোগদানের পর চেয়ারম্যানের অনুপ্রেরণায় এ যাবৎ ৪২ হাজার বৃক্ষ রোপণ ও বিতরণ করেছি। শরীয়তপুর জেলা পরিষদের ছাদ ও আঙ্গিনার কোথাও খালি জায়গা রাখিনি। কোথায় সৌন্দর্য বর্ধক ফুল গাছ, ওষুধি গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত করার পাশাপাশি পরিবেশকেও করা হয়েছে সমৃদ্ধ। ছাদে মাল্টা, সফেদা, কয়েক ধরনের লেবু, থাই কাঁঠাল, চাইনিজ কমলা, পবিত্র ত্বীন ফল, মালবেরী, ননি, করমচা, ড্রাগন, কালোজাম, সাদাজাম, বড়ই, পেয়ারা, চেরী, কাঠলিচু, আতা, শরিফা, পালমার, মিয়াজাকি, ফজলিআম, আ¤্রপালি, হিমসাগর, লিচু, কাঠলিচু, জলপাই, কামরাঙা, চালতা, জামরুল ও আপেল। ফুলকপি, বাঁধা কপি, লাউ, বেগুন, কুমড়া, শশা, করলা, পেপে, পুঁই শাক, ডাটাশাক, টমেটো, ঘিকাঞ্চন শাক, লাল শাক আমাদের পরিষদ আঙ্গিনাকে করছে সুশোভিত। তার পরেও যখনই যেই নতুন ফল, ফুল ও ওষুধি গাছের সন্ধান করছি। আমাদের অফিস আঙ্গিনা বা ছাদে আসলে যাতে কেউ উদ্বুদ্ধ না হয়ে পারে না সেই প্রচেষ্ঠায় অনবরত কাজ করে যাচ্ছি। মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম ফরিদ আল হোসাইন বলেন, পরিবেশ রক্ষা কার্যক্রমে শরীয়তপুর জেলা পরিষদ জেলার অগ্রনায়ক। ওখান থেকে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসকেও পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলেছি। ইতিমধ্যে দুই শতাধিক ফুলের টবে শোভা পাচ্ছে নানা সৌন্দর্যবর্ধক ফুল। ক্যাম্পাসের আঙ্গিনায় রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন ফল ও ওষুধি গাছ। এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশ পাওয়ার সাথে সাথে পাচ্ছে একটি নির্মল নির্ভেজাল পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা এখান থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ বাড়ির আঙ্গিনাকেও সাজাচ্ছে পরিবেশবান্ধব হিসেবে। আমি বিশ^াস করি জেলা পরিষদের এমন উদ্যোগের হাত ধরে শরীয়তপুর অদূর ভবিষ্যতে হয়ে উঠবে পরিবেশবান্ধব অন্যতম জেলা হিসেবে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসান বলেন, শুধু জেলা পরিষদই নয় আমরা পরিবর্তিত জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় সকল সরকারি বেসরকারি ও ব্যক্তিদেরকেও অধিক পরিমাণ পরিবেশ সহায়ক গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য ছাদও ভরে উঠবে ফল, ফসল ও সবজিতে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশ রক্ষার এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তাছাড়াও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে অর্গানিক পদ্ধতি অনুস্মরণ ও পরিকল্পিত রাসায়নিক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। যার মাধ্যমে একদিকে যেমন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আমরা এগিয়ে যাব, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার ঘোষণাকে বাস্তবায়ন করে উৎপাদন ঘাটতি কমিয়ে আনতেও সফলতার দিকে এগিয়ে যাব।