শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৫ মার্চ ২০২৩ (বাসস) : গণহত্যা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হায়েনারা নির্বিচারে ঘুমন্ত বাঙালিদের হত্যা করেছিলো। তাদের হাত থেকে অবুঝ শিশুরাও রক্ষা পায়নি। ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাত্রির গণহত্যা বিশ্ব ইতিহাসের এক কলংকময় অধ্যায়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আজ পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মৃতি স্মরণ করে মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, হীনস্বার্থে ভূমি খেকোরা জায়গা দখল করতে করতে পাহাড়তলী বধ্যভূমিকে সংকুচিত করে ফেলেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই ষড়যন্ত্র মেনে নেব না এবং এহেন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তুলব।
মেয়র বলেন, ‘আমি প্রশাসন, নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগ করছি যাতে পাহাড়তলী বধ্যভূমিকে সম্প্রসারিত করে এমনভাবে ঢেলে সাজানো যায় যাতে জনগণ এখানে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উপলব্ধি করতে পারে। চট্টগ্রামের অন্য যেসব বধ্যভূমি বেদখল হয়ে আছে সেগুলোও উদ্ধার করে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হবে।’
স্বাধীনতা বিরোধীদের সমালোচনা করে মেয়র বলেন, এই বধ্যভূমিতে অসংখ্য নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। সেই পাকিস্তান আজ দেউলিয়াত্বের পথে। আর বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। যারা একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই এখন বধ্যভূমি দখল করছে, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধিতা করছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে এই হায়েনাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, লড়তে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে।
এসময় মেয়র বধ্যভূমি প্রদর্শন করেন এবং বধ্যভূমির উন্নয়নে কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. জহুরুল আলম জসিম, মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ ইসমাইল, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, মো. আবদুস সালাম, পুলক খাস্তগীর, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু প্রমুখ।
এ ছাড়া গণহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৭১ এর ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনী অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নজিরবিহীন গণহত্যার মাধ্যমে শুধু ঢাকা শহরে ১ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করে বিশ্বে সবচাইতে ঘৃণিত অপকর্মটি করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে একই দিনে এত বড় গণহত্যা আর কখনো ঘটেনি। আজ বিশ্ব মানবতার কল্যাণ ও সার্বিক অগ্রগতির স্বার্থে এই দিনটিকে আমরা কিছুতেই ভুলতে পারি না। আজ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনের কাছে এই দিনটিকে বৈশ্বিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া আজ সময়ের দাবি।
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২৫ মার্চ রাত ১১ টা ২০ মিনিটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর পর পরই রাত সাড়ে ১১ টায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন এবং যার যা কিছু আছে দিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালিকে প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতা নোমান আল মাহমুদকে নৌকা প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন দেয়ায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে নোমান আল মাহমুদকে বিজয়ী করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দীন চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উপপ্রচার সম্পাদক মো. শহিদুল আলম প্রমুখ।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত ও বিশেষ মোনাজাত করেন হাজী জহুর আহমদ।