শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ৩১ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলার ৬০০০ মেট্রিক টন ধানের উৎপাদন বাড়বে। যার বাজার মূল্য ৭৫ লাখ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে চাষাবাদের আওতায় এনে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান জানান। প্রধানমন্ত্রী বন্ধবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদের তত্ত্ববধানে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকারের দিক নির্দেশনায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বোরোধান আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠে নামে। তারা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের নিয়ে ৩২ টি উদ্বুদ্ধ করণ সভা করে। বিভিন্ন খালের কচুরিপানা পরিস্কার, জলাবদ্ধতা নিরসন ও খাল খনন করে অনেক জলাবদ্ধ পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনে। এছাড়া বোরো মৌসুমে সমলয় পদ্ধতি, কচুরিপানার বেডে ভাসমান পদ্ধতি ও ঢিবি পদ্ধতিতে কোটালীপাড়ায় চাষাবাদ শুরু হয়। এসব উদ্যোগের ফলে কোটালীপাড়া উপজেলায় ধানসহ অন্যন্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণের কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা না রেখে সব জমি চাষাবাদের আওতায় আনার নির্দেশ দেন। সেই লক্ষ্য পূরণে আমরা কৃষককে সরকারি প্রণোদনার বীজ সার দিয়েছি। সেই সাথে অধিক জমিতে চাষাবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করেছি। কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে ২৬ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানেরআবাদ করেছে। ফলে এ উপজেলায় ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এ বছর কোটালীপাড়া উপজেলায় ৬০০০ মেট্রিক টন ধানের উৎপাদন বাড়বে। যার বাজার মূল্য ৭৫ লাখ টাকা। কোটালীপাড়ায় সমলয় পদ্ধতিতে ১০০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষক কচুরিপানার ভাসমান বেডে ও ঢিবি পদ্ধতিতে সবজির আবাদ করেছেন । এখান থেকে অন্তত ৩০ লাখ টাকা মূল্যের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। এ কাজগুলো তত্ত্ববধান করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার দিক নির্দেশনা দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণের মহা-পরিচালক বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাস এসব চাষাবাদ এলাকা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। তিনি সার্বক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছেন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহাবানে সাড়া দিয়ে কৃষকরা উৎসাবের আমেজে ধান রোপণ করেছেন। সবজিও আবাদ করছেন। এসব কারণে এতবড় কর্মযজ্ঞ আমরা চালিয়ে নিচ্ছি।
কোটালীপাড়া উপজেলার পীড়ারবাড়ি গ্রামের কৃষক অনন্ত বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশি বেশি করে ফসল উৎপাদন করতে বলেছেন। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের প্রণোদনার সার বীজ দিয়েছে। বেশি করে ফসল রোপণের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে ও পরামর্শ দিয়েছে। এ কারণে আমি এ বছর ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি করেছি। এখান থেকে আমি ১০০ মণ ধান পাব।
একই উপজেলার কান্দি গ্রামের কৃষক সন্তোষ মধু বলেন, আমাদের জমি জলাবদ্ধ থাকত। তাই ধান চাষ করতে পারতাম না । এ বছর খালের কচুরিপানা পরিস্কার করা হয়েছে। সেই সাথে খাল খনন করে দেওয়া হয়েছে। জমি থেকে পানি নেমে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ধানের চারা দিয়েছে। এছাড়া ধান রোপণে শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাই আমার ১ একর জমিতে ধান রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানাই।
ধারাবাশাইল গ্রামের কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণের মহা পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার স্যার,ভাসমান বেডে সবজি চাষ প্রকল্পের পিডি ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বারবার আমাদের কাছে এসেছেন। ফসল চাষ বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাদের আন্তরিকতায় ও সহযোগিতায় আমরা ফসল চাষ বৃদ্ধি করেছি। মাঠে ধানের অবস্থাও বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসলের বাম্পার ফলন পাব।
কান্দি ইউপি চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে । কোটালীপাড়ায় এবার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ৫ কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন খালে কচুরিপানার ভাসমান বেডে সবজি ফলেছে। ঢিবি পদ্ধতিতে এখানে চাষাবাদ হয়েছে। এ ভাবে ফসল উৎপাদন অব্যাহত থাকলে আমাদের কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে। আর্থসামাজিক অবস্থা বদলে যাবে।