বাসস
  ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:১৩

কুমিল্লার চান্দিনার জোয়াগ গ্রামের মানুষ ব্যস্ত সময় পার করছেন পোশাক তৈরিতে

।। কামাল আতাতুর্ক মিসেল।।
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১ এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস) : রমজানের ঈদকে সামনে রেখে জোয়াগ গ্রামের মানুষদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্যতা বেড়েছে। এখন একে অপরের সাথে কথা বলারও সময় নেইা। যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন সবাই। এ দৃশ্য পুরো রমজান মাস জুড়ে দেখা যায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রাম জোয়াগের প্রতিটি ঘরে ঘরে। এ গ্রামের সকল নারী পুরুষ এমনকি স্কুলে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই রমজান মাসে ব্যস্ত হয়ে পড়েন পোশাক তৈরিতে। সারা গ্রামে দেখা যায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও অলিগলিত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চুমকির কাজ করা বিভিন্ন  রকমের ডিজাইনের তৈরি কাপড়। এ গ্রামের নারী-পুরুষ-শিশুসহ সব বয়সের মানুষেই কাপড়ে চুমকির কাজ করা বিভিন্ন রকমের ডিজাইনের পোষক তৈরি করতে নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে। গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর পাশাপাশি তাদের সন্তানেরাও পিছিয়ে নেই। প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজের ফাঁকে সময় অনুযায়ী কাপড়ে চুমকির কাজ করা যাচ্ছেন। এখান থেকেই তৈরি পোশাক চলে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় আলিশান মার্কেট গুলোতে। ঈদকে কেন্দ্র করে জোয়াগ গ্রামে যেসব পোশাক তৈরি হচ্ছে তা হলো থ্রী পিস, শাড়ি, লেহাঙ্গাসহ বিভিন্ন নিত্যনতুন ডিজাইনের জামা কাপড়।
সরেজমিনে জোয়াগ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নারী পুরুষ সবাই যার কাজ নিয়েই যেন ব্যস্ত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় ওই গ্রামের কারখানার মালিক আলমগীর, কাউসার, সরোয়ার, সাজ্জাদ। তারা জানান, এ গ্রামের মানুষেরা ১২ মাসই চুমকির কাজ করা পোশাক তৈরি করে। তবে রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করেই দু তিন মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় তাদের কাজের কর্মচাঞ্চল্যতা। এ সময়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিত্য নতুন ডিজাইনের চুমকির পোশাক তৈরিতে। এখন সবাইর একটি লক্ষ্য থাকে ঈদের বাজার শেষ হবার আগেই দোকানীদের হাতে মাল তুলে দিতে হবে। সে কথা মাথায় রেখেই তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন  জেলার বড় বড় দোকানীরা জোয়াগের বুটিক কারখানার মালিকদের সাথে কথা বলে তাদেরকে এ কাজের অর্ডার দেওয়া হয়। দোকানীরা কাপড়গুলো পিস করে সাথে ডিজাইনের ফটোকপি বুটিক মালিকদেরকে দিয়ে থাকে। তারা ডিজাইন অনুযায়ী কাপড়ে কাজ করে ঢাকায় নিয়ে মালগুলো দোকানে দিয়ে আবার নতুন নতুন মালের অর্ডার নিয়ে আসে। জোয়াগ গ্রামের বুটিক শিল্পের কারিগর জাফর, সাত্তার, নজরুল, মাসুম, তারা প্রত্যেকেই জানান, সকাল ৮ থেকে রাত ১২ পযর্ন্ত কাজ করেন এবং কাজের ফাঁকে দুবার বিশ্রাম নেন তারা। মাস শেষে পারিশ্রমিক পান প্রত্যেকেই দশ থেকে ১২ হাজার টাকা করে। তবে রোজার মাস এলেই তাদের পারিশ্রমিক বেড়ে যায়। তখন প্রত্যেক কারিগর পান ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এ চুমকির কাজ করে যে টাকা পাচ্ছে সে টাকা পেয়ে কারিগররা সবাই খুশি। তারা বলেন, আমরা আমাদের নিজ গ্রামের বসে পরিশ্রম করে টাকা কামাই করছি এটা তো বড়্ই আনন্দের। তবে তাদের চুমকির পোশাক তৈরির কাজ শবে কদর রাত পর্যন্ত চলবে।