বাসস
  ১০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৫

জয়পুরহাটে মার্কেট গুলোতে উপচেপড়া ভিড়

জয়পুরহাট , ১০ এপ্রিল, ২০২৩(বাসস) : উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত ঘেঁষা ছোট জেলা জয়পুরহাটের মার্কেট গুলোতে উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা । বিভিন্ন মার্কেট, বিপণী বিতান, বিগবাজার, শপিংমল ও হকার্সপট্টি এখন ক্রেতা সমাগমে মুখোরিত। এবার দেশীয় কাপড়ের  পাশাপাশি  বিদেশী  চাহিদা বেশি বলে জানালেন কাপড় বিক্রেতারা।   
বিভিন্ন মার্কেট  ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজানের শুরুতে বেচা বিক্রি একটু কম থাকলেও ১৫ রোজার পর থেকে মার্কেটে ক্রেতা সমাগম বেড়ে  যায় এবং কেনা কাটাও বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন রাতে সুবিধামত সময়ে লোকজন যাচ্ছেন মার্কেটে, বিপণী বিতান ও শপিংমলে। ঈদ মার্কেটের কারণে শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে ক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নিউ মার্কেট এবং পূর্ব বাজারের বড়  কাপড়ের দোকান ও ফ্যাশান শো, শপিংমলসহ অন্যান্য কসমেটিকস, জুতা ও সাধারণ কাপড়ের দোকান গুলো। নারী, পুরুষ, শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কিনছেন তাদের পছন্দসই সামগ্রী। ক্রেতারা এখন পোশাক সামগ্রী  কিনলেও  প্রসাধনী ও জুতোর দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সকাল থেকে আসা ক্রেতাদের ভিড়ে শহরে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। কেনা-বেচা চলে  রাত ১২ পর্যন্ত।  যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জেলা শহরের নিউমার্কেট, সদর রাস্তা, পূর্ব বাজার কাপড় পট্টি, এনামুল হক মার্কেট, মীনা বাজার ও হকার্স পট্টির, বিগবাজার, মৌসুমী , শাহাজান আলী মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান-পাঠ ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা বাড়তি কথা বলার সময় পাচ্ছেন না। পূর্ব বাজারের করিম গেঞ্জি স্টোর ও বাবু গামের্ন্টসে ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।  রোজা শুরুর পর  বেচা-বিক্রিতে একটু ভাটা পড়লেও  শেষ পর্যায়ের বেচা কেনা চলছে পুরো দমে বলে জানালেন পূর্ব বাজারের বাবু গার্মেন্টসের মালিক মাসুদ পারভেজ বাবু। তিনি জানান, ছোট শিশুদের জন্যও রয়েছে  বেবী সেট ও গেঞ্জি সেট, কিশোর যুবদের  জন্য রয়েছে পাঞ্জাবী। পাঞ্জাবী বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ২৫শ পর্যন্ত। ঈদের অনেক কেনা কাটার মধ্যে ১২শ টাকা দিয়ে একটি পাঞ্জাবী কিনে খুশি বলে জানান, রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম । বিভিন্ন মাপের গামের্ন্টস পোশাক শিশুদের জন্য  বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত ।  থ্রি পীস ১৫ শ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও এবার নায়েরা নামে মহিলাদের কাপড়ের চাহিদা বেশি বলেও জানান তিনি। নায়েরার দাম হাকা হচ্ছে ছোট বড় অনুযায়ী ১২শ থেকে ৫ হাজার পর্যন্ত। কাপড়, সেলাই ও মজুরী বেড়ে যাওয়ায় গত বারের তুলনায় এবার প্রকার ভেদে ২শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব বাজারের দ্বিতীয় তলায় লেডিস মার্কেটের সাজ লেডিস কালেকশনের মালিক নাসরিন আক্তার জানান, ক্রেতাদের নিকট এবার জনপ্রিয় আইটেম হচ্ছে ইন্ডিয়ান সারারা, ঘারারা, ডায়মন্ড, বিবেক, লংস্কাট, পাখি লেহেঙ্গা, ঐশ্বরিয়া বাবর্টী, মূল্যাইট, পার্টিক্রম, স্কাট, জর্জেট নিম্নে  ২২০০ টাকা থেকে উপরে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পছন্দসই কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। ক্রেতারা তাদের সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় করে কেনাকাটা করছেন। এবার  পাইকারী বাজারে কাপড়ের দাম বেশি  বলেও জানান তিনি।  দেশীয় শাড়ীর মধ্যে সিল্ক, কাতান ও টাঙ্গাইলের শাড়ির চাহিদার পাশাপাশি  গ্রাউন, থ্রিপিচস ও বেবী সেট মেয়েদের পোশাকের চাহিদা এবার বেশি বলে জানালেন কাপড় ব্যবসায়ী সুজন কুমার মন্ডল ও  শফি বিশ্বাস।  নিউমার্কেট, বিপণীবিতান ও শপিংমল ছাড়াও রেলওয়ে হকার্স মার্কেটে ও রাস্তার পাশের ছোট দোকান গুলো থেকে কেনাকাটা করছেন নি¤œ  আয়ের ক্রেতারা তাদের সামর্থ অনুযায়ী। নতুনহাট এলাকার শিশু  আল শাহাদাত জানান, থ্রি-কোয়াটার প্যান্ট ও স্যান্ডেল কেনেছেন এবারের ঈদে।  বাগিচাপাড়া মহল্লার  আব্দুল হাকিম   ৫০০০ টাকার মধ্যে দুটি পাঞ্জাবী, একটি টাউজার কিনেছেন। দাম একটু বেশি  বলে জানান তিনি।  নিউ মার্কেটের ফেমাস টেইলার্সের মালিক আলহাজ্ব মকবুল হোসেন বলেন, রমযানের ঈদে গামের্ন্টস কাপড় বা রেডিমেট কাপড়চোপড় বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। তারপরে ঈদ আসলে অতিরিক্ত আয় ইনকামের আশায় জয়পুরহাটের অনেক দর্জি কারিগর ঢাকাতে চলে যায়। ফলে কারিগর অভাবে সময় মত ডেলিভারী দেওয়ার স্বার্থে বেশি কাপড় বুকিং নেওয়া সম্ভব হয়না।  এবার সেলাইয়ের জন্য  সার্ট প্রতি ৪০০-৪৫০ টাকা , প্যান্ট ও পাঞ্জাবী সেলাই প্রতিটি ৪শ-৫শ টাকা মজুরী নেওয়া হচ্ছে। জেলা শহরের প্রায় শতাধিক টেইলার্সের শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান তিনি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, জেলার সার্বিক আইনশৃংলা  ভালো । তারপরেও   ঈদের কেনাকাটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মার্কেট গুলোতে। বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা  গ্রহণ করায়  সন্তোষ প্রকাশ করেন পূর্ব বাজার কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ বাবু ।