শিরোনাম
কুড়িগ্রাম, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস) : জুনের শেষ সপ্তাহে যখন ধরলার পানি বেড়ে বন্যা হবে তখন ডুবে যাবে পটল ক্ষেত। পুরো মৌসুম পটল বিক্রি করা হবেনা-তারপরেও বন্যা আসার আগে যে পরিমাণ পটল বিক্রি হবে তাতেই উৎপাদন খরচের দ্বিগুন লাভ হবে। আর এ আশায় ধরলার চরের শত শত কৃষক পটলের চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন বিগত কয়েক বছরে। এ বছর পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চর জুড়ে পটলের সবুজ ক্ষেত মায়াবী হাতছানি দেয়। বাজারে পটলের দামও মিলছে আশানুরুপ। তাই বেশি লাভের আশায় বুক বেঁধে চরের কৃষক।
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামজুড়ে ধরলা নদীর বুকে প্রায় ৬০ একর জমিকে পটল চাষ করেছে প্রায় শতাধিক কৃষক।
খামারবাড়ীর দেয়া তথ্যে চলতি খরিপ মৌসুমে ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর সবজির মধ্যে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর বাকী মৌসুম জুড়ে পটল বিক্রি করতে পারবে চাষিরা । বাজারে চাহিদাও প্রচুর। এখন রমজান মাস উপলক্ষে নতুন পটলের চাহিদা বেশি ।মাঠে ৪০ থেকে ৪৫টাকা কেজি দাম পরলেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পটল। এক বিঘা জমিতে পটল চাষ করে সব খরচ মিটিয়ে ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুনাফা হয়। তাই অন্য ফসল চাষ না করে এষানকার কৃষকরা নিজের সঞ্চিত অর্থ ছাড়াও ঋণ নিয়ে পটল আবাদ করছেন প্রতি বছর।
পটলচাষি আমজাদ জানান, রমজান মাসের এ সময়ে বাজারে নতুন পটলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। গতকাল ২ হাজার টাকা মণে পাইকাররা নিয়ে গেছে। আজ একটু দাম কমেছে। ১ হাজার ৮শ’ টাকা দাম বলছে। এখনো দরাদরি চলছে।
উত্তর নওয়াবশ গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, গতবার এক একর জমিতে পটল আবাদ করেছি। ক্ষেত তৈরী করতেই প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবার জাংলা খরচ লাগছে না। ফলে অর্ধেক খরচে পটল লাগানো হয়েছে। এখন পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। আশা করছি ভালো দাম পাবো।
কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টি আর প্রচন্ড খরার কারণে পটলের পাতা কিছুটা লালবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা ঘর ঘন স্প্রে করছেন ক্ষেতে। পটলচাষি জুবায়েদ ও লিটন জানান, বৃষ্টি ও প্রচন্ড খরার কারণে পটল ক্ষেত লালবর্ণ ধারণ করছে। নানা ধরণের ভিটামিন জাতীয় প্রয়োগ করছেন-আশা করছেন রোগ ব্যাধি দূর হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চরাঞ্চলে পটলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ ব্যাধির কারণে উৎপাদনে যেন কোন বিঘœ সৃষ্টি না হয়-সেজন্য উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা ধরণের পরামর্শ দিচ্ছেন।