বাসস
  ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৪৪

ঝড়-ঝঞ্জা-শীলা বৃষ্টি না হলে এবারও বগুড়ায় কৃষকের স্বপ্ন পূরণের আশা

বগুড়া, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস): কৃষক সোনালী স্বপ্নে বিভোর । বগুড়ায় শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা। ঝড়-ঝঞ্জা , শীলা বৃষ্টির আতংকে দিন কাটছে বোরো চাষিদের । ঝড় শীলা বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি না হয় এর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাকাধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলা জন্য মাইকিং করছে। তীব্র  তাপপ্রবাহে কিছু কিছু ধানের জাতের সামান্য ক্ষতি হলেও বরাবরের মত এবারও  বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবার আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তীব্র দাব দাহের পর আর যেন ঝড় ,শীলা বৃষ্টি  যেন আঘাত না হানতে  পারে  এ কটাই  প্রার্থনা কৃষকের । বাড়ির নারী সদস্যরা গোবর দিয়ে উঠান লেপছে। বাড়ির নারীরাও সোনালী স্বপ্ন দেখছে। এ ধানই তাদের সব। 
জেলায় এবার ১ লাখ ৮৬ হাজার হেক্টল  জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৭৬ হাজার মেট্রিকটন(ধান আকারে)। কৃষি বিভাগের সূত্র থেকে জানা গেছে এ পর্যন্ত   বগুড়ায় ধান কাটার উপযোগী হয়েছে ২ থেকে ৩ শতাংশ হয়েছে।  যার পরিমান ৩৭শ‘ হেক্টর। আর কর্তন হয়েছে গত দুই দিন ধরে ধানকাটা শুরু হয়েছে ।  এখন পর্যন্ত ৫৭০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী ১০  থেকে ১৫ দিনের মধ্যে অনেক জমির ধান কাটার উপযোগী হবে এমনটাই আশা করছেন জেলার কৃষি কর্মকতারা। 
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চোপি নগর ইউনিয়েনের বৃ-কুষ্টিয়া এলাকায় বিআর-২৮ ধান তীব্র তাপপ্রবাহে কিছু ফসল চিটা হয়েছে বলে জানালেন ঐ এলাকার কৃষক শুকুর আলী । কোন ওষুধেও  কাজ করেনি। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, বিআর-২৮ এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে । এর বদলে অন্যজাতের  ধান লাগাচ্ছে কৃষক।  তিনিআরো বলেন, ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রী তাপমাত্রা অতিক্রম করার সময় যদি ধানে ফুল  আসে সে সময় তীব্র  তাপ প্রবাহ শুরু হলে ধানের রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা সহনীয় মাত্রার বাইরে চলে যায়। পরাগায়নের সময় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে  ধানে চিটা দেখা দেয়।  বিশেষ করে বিআর-২৮ ধানের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে। এর পরিবর্তে  উচ্চ ফলনশীল কাটারী ভোগ চাষে ঝুকেছে কৃষক।  এ ধানের চাল সরু ও এতে ফলনও বেশি। 
বৃ-কুষ্টিয়া এলাকার কৃষক  আব্দুল জলিল জানান,  ধান কাটার মজুরী এক এক  এলাকার এক এক রকম। এ  এলাকায়    একজন শ্রমিকের মজুরী ৬০০ টাকা। এক বিঘা জমির ধান কাটা ও কৃষকের উঠানে পৌছে দেয়া পর্যন্ত  তিন বেলা খাবারবাদে  ৬ জন কৃষকের প্রতিজনকে  দিতে  হচ্ছে  ৩৬০০ থেকে ৪ হাজারটাকা।  ঐ এলাকার কৃষকরা জানান,ধান কাটা মেশিন আসলে তাদের এতো টাকা মজুরী লাগতো না ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাআমিনা খাতুন জানান, কৃষকদের মধ্যে এখনও সচেতনার অভাব। এবার তীব্র তাপপ্রবাহে তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ছাড়া ধানে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ স্প্রে করেছে।তাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রীর উপরে গেলে  ধানের গোড়ায় ২ ইঞ্চি পরিমান পানি জমা রাখতে হবে। প্রয়োজনে পরাগায়নের সময় ধানের শীষে পানি স্প্রে করতে হবে। তবে  এখন তাপপ্রবাহ কমেছে।  আর ১০ থেকে ১৫ দিন যদি কোন ঝড়-ঝঞ্ঝা ,শীলা বৃষ্টি না হলে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হবে। কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হবে।