বাসস
  ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৬

কুমিল্লার দেবিদ্বারের শংকর ঘোষ ৪০ বছর ধরে মাঠা’র ঐতিহ্য ধরে রেখেছে 

॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৭  এপ্রিল, ২০২৩ (বাসস) : জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা গ্রামের শংকর ঘোষ। তিনি চল্লিশ বছর ধরে মাঠা বিক্রি করছেন। শখ করেই এ ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। পরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পুরোপুরি ব্যবসা শুরু করেন। তার দেখাদেখি একই গ্রামের মন্টু ঘোষ,  পঙ্কজ দত্ত, কার্তিক ঘোষ, বিল্লাল হোসেন মাঠার ব্যবসা শুরু করেন। 
বরকামতা এখন মাঠার গ্রাম বলেই পরিচিত সবাই কাছে। দেশের অন্য এলাকার মাঠা থেকে এর আলাদা গুনাগুণ ও স্বাদ থাকায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাঠা খেতে লোকজন আসে এ গ্রামে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঠেরপুল হয়ে বরকামতা গ্রামে সহজে যাওয়া আসা করা যায়।
গ্রামের কয়েকজন জানান, গরমের তৃষ্ণা মিঠায় এ মাঠা। মাঠার নামে এ গ্রামটি বেশ পরিচিত। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে মাঠা খেতে নারী-পুরুষ  ও শিশুরা আসেন। গরমে মাঠা বিক্রির ধুম পরে বেশি। প্রচুর লোকজনের সমাগম হয়। বাজারের পাঁচটি দোকানে লোকজন ভরপুর থাকে। এছাড়াও দুই ঈদে, পূজা, পহেলা বৈশাখে লোকজনের আনাগোনা থাকে বেশি। তখন ৩০/৪০ মণ মাঠা বিক্রি হয় প্রতি দোকানে।     
মাঠার গ্রাম বরকামতা সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় মাঠা বিক্রেতা শংকর ঘোষের সঙ্গে। তিনি বাসসকে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ মণ মাঠা বিক্রি হয়। অনেক দূর থেকে লোকজন এ গ্রামে মাঠা খেতে আসেন। অনেকে আবার বোতলে করে বাড়িতেও নিয়ে যায়। মাঠার বানানোর কারিগর মহিউদ্দিন বলেন, টক দই, পানি, চিনি, লবন ব্লেন্ডারে মিশিয়ে মাঠা দেওয়া হয়। প্রতি গ্লাস মাঠার দাম রাখা হয় ৩০ টাকা। প্রথমে হাতে মেশানো হত। এখন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সময় বাঁচাতে ব্লেন্ডারে মিক্সড করা হয়। পাশ্ববর্তী চান্দিনা উপজেলা থেকে মাঠা খেতে আসা জয়দেব ও নাজিম উদ্দিন বাসসকে বলেন, এখানকার মাঠা অন্যদের থেকে একটু আলাদা। স্বাদও অন্যরকম। আমরা প্রায় সময়ই মাঠা খেতে এ গ্রামে আসি। আলমগীর হোসেন দাউদকান্দি থেকে মাঠা খেতে আসছেন। তিনি বলেন, বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেলে দেখছিলাম যে, এখানকার মাঠা খুব সুস্বাদু। তাই আজ খেতে আসছি। আসলেই খুব সুস্বাদু।  
গৃহিণী আমেনা বেগম বলেন, আমি চাঁদপুর থেকে এখানে মাঠা খেতে আসছি। আমার দেবর আমরি প্রায় এখানে মাঠা খেতে আসে। ও বলছে এখানকার মাঠা খুব সুস্বাদু। তাই আসলাম। খেয়ে মনে হলো মাঠাটা আসলেই অনেক সুস্বাদু।
মাঠা বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন ৪/৫মণ মাঠা বিক্রি হয়। অনেক দূর থেকে লোকজন মাঠা খেতে এ গ্রামে আসেন। বরকামতা বাজারের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ভালো দুধের কারণেই এখানে ভালো মানের মাঠা তৈরি হয়। তবে মাঠা তৈরিতে কারিগররাও যথেষ্ট যতœশীল। মাঠা তৈরিতে এ গ্রামে বেশ কয়েকজনের সুনাম রয়েছে। এর মধ্যে শংকর ঘোষ অন্যতম। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি মাঠা তৈরি ও বিক্রি করছেন।