শিরোনাম
॥ ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন ॥
নাটোর, ৩ মে, ২০২৩ (বাসস) : নাটোরের উত্তরা গণভবনে এখন হৈমন্তির ভরা মৌসুম। সাতটি হৈমন্তির রুপে রসে গন্ধে অনন্য হয়ে উঠেছে উত্তরা গণভবনের আঙিনা। ফুলের কানে ভ্রমরের গুঞ্জনে মোহনীয় চারিদিক।
অপরুপ স্থাপত্য শৈলীর রাজপ্রাসাদ আর বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসা অসাধারণ সব সামগ্রীর সংগ্রহশালাকে ছাড়িয়ে যায় গণভবনের দুষ্প্রাপ্য কিছু গাছের সমাহার। এর বেশীরভাগটাই ফুল গাছ। এরমধ্যে পারিজাত, ম্যাগনোলিয়া, নাগালিঙ্গম, এগপ্লান্ট, সুরভিকা আর হৈমন্তি অন্যতম। এসব ফুল গাছের উপস্থিতি জানান দেয়, উত্তরা গণভবন শুধু রাজপ্রাসাদই নয় সুবিশাল পুষ্প সা¤্রাজ্যও বটে।
এরমধ্যে পারিজাত চক্রাকারে পাতার রঙ পাল্টিয়ে লাল রঙের ফুলের থোকায় পরিণত হয় বসন্তে। এগপ্লান্টে প্রায় সারা বছর দু’একটা ফুল থাকলেও শীত আর বর্ষা এর ভরা মৌসুম। নাগালিঙ্গম আর ম্যাগনোলিয়া বসন্তে ফুটলেও বিস্তৃতি বর্ষাকাল পর্যন্ত। রাজার প্রিয় ফুল সুরভিকা ফোটে মূলত শীতকালে।
আর বসন্তে পাতা হারিয়ে হৈমন্তি গাছগুলো হয়ে পড়ে বিবর্ণ। বসন্তের শেষার্ধে ফুল আসতে শুরু করলেও গ্রীষ্মে হৈমন্তির রুপ হয়ে ওঠে অপরুপ। সারাগাছ জুড়ে ফুল আর ফুল, কোন পাতা নেই। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে এ যেন শুভ্র সুন্দর শান্তির পরশ। গ্রীষ্মের এ ফুল সুবাস ছড়াবে অন্তত দুই মাস। এটিই হৈমন্তির ভরা মৌসুম। শরতে আরো একবার হৈমন্তি শুভ্র সুন্দর হয়ে ওঠার চেস্টা করে। তবে এত ফুলের প্রাচুর্য আর সুবাস তখন থাকে না।
গণভবনের সিংহ দুয়ার পেরিয়ে সোজা এগিয়ে গেলে ইটালিয়ান গার্ডেনের প্রবেশপথের আগে দাঁড়িয়ে আছে একটি হৈমন্তি। ইটালিয়ান গার্ডেনে একটি, হরিণনিবাসে একটি, সংগ্রহশালার সাথে একটি, রাজপ্রাসাদের সামনে দুইটি হৈমন্তি গাছ। আর রাণীমহলে একটি হৈমন্তি গাছ। ধীরে বর্ধনশীল হৈমন্তির সাতটি গাছের মধ্যে রাজপ্রাসাদের সামনের গাছটি ফুলে ফুলে সবচে’ সমৃদ্ধ।
দর্শনার্থীদের প্রশান্তি আর মুগ্ধতার কেন্দ্রবিন্দু এখন হৈমন্তি। প্রতিদিন হাজারো দর্শনার্থী সৌন্দর্য উপভোগ করছেন হৈমন্তীর। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনস্ অথরিটির (বেপজা) এসিসট্যান্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল দিলারা শারমিন মুগ্ধতা নিয়ে বললেন, ‘হৈমন্তি আগে কখনো দেখিনি। অপরুপ এর সৌন্দর্য’। গণভবন সুন্দর, তবে হৈমন্তি’র সৌন্দর্য তুলনাবিহীন’-এই অভিব্যক্তি ব্যক্ত করলেন সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির মানবিক ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন ড. মোঃ রেজাউল করিম।
জেলা প্রশাসক ও উত্তরা গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু নাছের ভূঁঞা বলেন, গণভবনের আঙিনায় হৈমন্তি’র সৌন্দর্য মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। আকর্ষণীয় এ গাছের বংশ বিস্তারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।