বাসস
  ০৮ মে ২০২৩, ২১:৪৪

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন তৈরির বিকল্প নেই : সচিব শামসুল আরেফিন

চট্টগ্রাম, ৮ মে ২০২৩ (বাসস) : সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন বলেছেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে স্মার্ট সিটিজেন তৈরির কোন বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি।
তিনি বলেন, আইসিটি ডিভিশনের অনেকগুলো প্রকল্পের মধ্যে লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণ না নিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেকে ১৫/২০ লাখ টাকা খরচ করে কষ্ট করে বিদেশে যায়। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার সময় তাদের অনেকে নৌকা ডুবিতে মারা যায়। এভাবে বিদেশে থাকাও সম্ভব নয়। লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রশিক্ষণ নিতে পারলে ঘরে বসে সারাবিশ্ব আপনার চাকুরীস্থল হয়ে যাবে। বিদেশে আর যেতে হবেনা। বিদেশে ব্যয়ও বেশি, ভর্তুকিও দেয়না।  
সোমবার (৮ মে) চট্টগ্রাম নগরীর লেডিস ক্লাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক  বাস্তবায়নকৃত লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র, ল্যাপটপ বিতরণ ও চাকুরী মেলার অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব এসব কথা বলেন। এলডিইপি লট-৯, বিটুএম টেকনোলজিস লিঃ, আইডিয়াটেক লিঃ ও রোমোটিক লিঃ-এর বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সচিব মো. শামসুল আরেফিন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গর্ভমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে ক্যাশ ব্যবহার ও দূর্নীতি হবেনা। প্রযুক্তিকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পাবেনা। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণের আওতায় সারা দেশে ৬৪টি জেলা ও ৪৯২টি উপজেলায় ৪০ হাজার তরুণ-তরুণীকে এ প্রকল্পের আওতায় দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে নতুন প্রকল্প আমরা দেব।
তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টায় তথ্যপ্রযুক্তিতে পরিবর্তন আসছে। তাঁদের হাত ধরেই দেশে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। এতে দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন খাত। তরুণ সমাজ তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের মতো নানা কাজ শেখানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। তারা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। তরুণ উদ্যোক্তাদের সাজেশন  নতুন প্রকল্পে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।
অনুষ্ঠানে লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১২১ জন ফ্রি-ল্যান্সারের মাঝে ল্যাপটপ ও সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি। এর পর চাকুরী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম জেলায় ৭০টি ব্যাচে মোট ১ হাজার ৪’শ জনের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মাঝে ল্যাপটপ ও অন্যান্যদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক (উপসচিব) মো. হুমায়ুন কবির ও রোমোটিক লিমিটেডের পরিচালক হেলাল আহমেদ রুহেল। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবদুল মালেক। অনুভূতি ব্যক্ত করেন ফ্রি-ল্যান্সার সাবরিনা ইসলাম রাহা ও সুমন কান্তি দাশসহ আরও অনেকে।