বাসস
  ১৩ মে ২০২৩, ২০:১১

উপকূলীয় ৬ থানার নিরাপত্তায় পুলিশের নজরদারি, সিএমপিতে প্রস্তুত ৭ হাজার সদস্য

চট্টগ্রাম, ১৩ মে, ২০২৩ (বাসস) : ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বাড়ি-ঘর ফেলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া চট্টগ্রামের উপকূলীয় ছয়টি থানা এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। 
জনমানব শুন্য ঘর-বাড়িতে যাতে কোন সুযোগ সন্ধানী হানা দিয়ে গবাদিপশুসহ কোন সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে এবং এসব এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে জেলা পুলিশ। 
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে ৭ হাজার পুলিশ সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া সিএমপির সদরদফতরে চালু করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। 
শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ বলেন, শনিবার সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে প্রচারণা চালাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। বিশেষ করে এই ইউনিটের আওতাধীন ৬টি উপকূলীয় থানায় ব্যাপক মাইকিং করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এসব এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নজরদারি বৃদ্ধি করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, কেউ সমস্যায় পড়লে থানা অথবা জেলা পুলিশ কর্মকর্তাদের ফোন দেবেন। না হয় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলেও হবে। আমাদের টিম উদ্ধার তৎপরতা, জনসাধারণের চিকিৎসা সেবাসহ যেকোনো জরুরি সেবা দিতে তৎপর থাকবে। 
এছাড়া জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে একটি জরুরি সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কবীর আহমদকে। জেলার আওতাধীন লোকজনকে জরুরি সেবার জন্য ০১৩২০-১০৭৪০২, ০১৩২০-১০৮৩৯৮, ০১৩২০-১০৮৩৯৯ ও ০২-৪১৩৫৫৫৪৯ এই চারটি নম্বরে যোগাযোগ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব নম্বর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
এদিকে শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ হাজার অফিসার-ফোর্স নিয়ে পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পতেঙ্গা সী বিচ, পারকি বিচ, মেরিন ড্রাইভ রোডসহ বিভিন্ন দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মাইকিং করা এবং বিশেষ টিম মোতায়েন করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী, ঘূর্ণিঝড়কালীন এবং পরবর্তীতে যেকোনো ধরনের সেবা গ্রহণের উদ্দেশ্যে বা তথ্য জানার জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নগরবাসীকে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।  
এদিকে এডিসি (ক্রাইম) মো. জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ২৪ ঘন্টা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে সিএমপি। ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত নগরবাসীর  ফোন রিসিভ করবে এবং সেই অনুযায়ী তাৎক্ষণিক সমাধানের ব্যবস্থা করবে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর সমূহ- ০১৬৭৬১২৩৪৫৬, ০১৩২০০৫৭৯৮৮, ৬৩০৩৫২, ৬৩০৩৭৫ ও ৬৩৯০২২।
জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চট্টগ্রাম শহর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে ১ হাজার ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ এক হাজার ১১০ জন।  জেলায় ৮ হাজার ৮৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা আবহাওয়ার বার্তা প্রচার করছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের রেসকিউ বোট ও মেডিকেল টিম। পর্যাপ্ত সরঞ্জামসহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।