বাসস
  ১৪ মে ২০২৩, ১০:৩৬

নড়াইলের হাট-বাজারে উঠছে পাকা লিচু

নড়াইল, ১৪ মে, ২০২৩ (বাসস) : চলতি মৌসুমে নড়াইলের বিভিন্ন হাট-বাজারে স্থানীয় লিচুর সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।সদর,লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় লিচুর ফলনও ভালো হয়েছে।লিচুর মৌসুমে দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।স্থানীয় ভালো জাতের ১শ’লিচু ১৮০ টাকা  ২শ’ টাকা দরে খুচরাভাবে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারীভাবে প্রতি হাজার লিচু গড়ে ১৩শ’টাকা থেকে ১৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।ঘূর্ণিঝড় মোখার ভয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ৭০-৭৫ ভাগ লিচু পেড়ে ফেলা হয়েছে।স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার লিচু ঢাকা, চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ,সাতক্ষীরা, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য যাচ্ছে।এবারে বেশিরভাগ গাছে পোকামুক্ত লিচুর উৎপাদন  হয়েছে বলে জেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিপু মজুমদার জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নড়াইল সদর উপজেলার পংকবিলা, লস্করপুর, আউড়িয়া,মাইজপাড়া,গোবরা,বাঁশগ্রাম,উজিরপুর, বিজয়পুরসহ ৩০-৩৫টি গ্রামে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। এসব গ্রামে প্রায় অর্ধশত লিচু বাগান রয়েছে। প্রতিটি বাগানে ১০টি থেকে ১৫০টি পর্যন্ত লিচু গাছ রয়েছে।লিচু চাষে অনেকেই সফলতা পেয়েছেন।আবার অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন।  এছাড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়ির আশেপাশে কম-বেশি লিচু গাছ রয়েছে।
সদর উপজেলার পংকবিলা গ্রামের লিচু বেপারি রিপন মোল্যা, স্বপন ও সৌরভ জানান, এবার লিচুর ফলন ভালো। আবার দেশের বিভিন্ন জেলায় এখানকার লিচুর চাহিদাও রয়েছে।তারা এ জেলার লিচু ঢাকা, চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ,  সাতক্ষীরা, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য পাঠাচ্ছেন।লিচু শ্রমিক লস্করপুর গ্রামের বাদশা মোল্যা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে আউড়িয়া, লস্করপুর ও পংকবিলা গ্রামের প্রায় ৭৫ ভাগ দেশী আধা পাকা লিচু পেড়ে বিক্রি করা হয়েছে।
পংকবিলা গ্রামের লিচু চাষি কামরুজ্জামান খান তুহিন বলেন, বর্তমান তার ৬ একরের বাগানে ১৬০টির মতো মোজাফফর, চায়না-৩ ও দেশী জাতের লিচু গাছ রয়েছে। বাগানের সব লিচুই ফরমালিনমুক্ত ও বিষমুক্ত। এবার ৭-৮ লাখ পিস লিচু বিক্রির আশা করছেন তিনি। ফলন ভালো হলেও খরার ও প্রাকৃতিক দুূর্যোগের ভয়ে কিছু লিচু পেড়ে ফেলা হচ্ছে। তবে মোজাফফর ও চায়না জাতের লিচু পাকতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।মধুমতি ও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার অন্যবারের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ লিচু ঢাকা, চট্টগ্রাম,সাভার, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে।  
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, জেলায় এ বছর প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে।৫৮০মেট্রিক টন থেকে ৬শ’ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এবার ফলনও ভালো হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় মোখার ভয়ে এবং অতিরিক্ত খরার কারণে অনেক চাষি আধা পাকা লিচু পেড়ে ফেলছেন। তাদেরকে অপরিপক্ক লিচু না পাড়তে এবং খরা থেকে ফলন বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।