শিরোনাম
যশোর, ২২ মে,২০২৩ (বাসস) : জেলার চৌগাছা উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে মধুমাসে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ হরেক স্বাদের ফলের সমারোহ। ফলের দোকান গুলোতে সাজানো নানা জাতের আম, লিচু, পেয়ারা, তরমুজ, কলাসহ নানা ধরণের দেশি ফল। সাথে রয়েছে বিদেশি ফলও। এ সকল ফলের যথেষ্ঠ সরবরাহ থাকার কারণে ফলের দাম তুলনামূলক কম বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে মৌসুমী ফলের সহজলভ্য ও কম দামে কিনতে পেরে ক্রেতারা খুশি।
সকাল হতে রাত পর্যন্ত হাকডাক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চলছে শহর জুড়ে মৌসুমী ফলের কেনাবেচা। জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হতে মৌসুমী ফলের সমাহার সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। বর্তমানে ফল বাজারে দেখা মিলছে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ আর গুটি আম, হিমসাগর। বাজারে যে আম বিক্রি হচ্ছে তা বেশিরভাগই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাগান থেকে আসছে। এছাড়া ল্যাংড়া ও অন্য জাতের যে আম বিক্রি হয় তার বেশির ভাগ সাতক্ষীরা এবং রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল হতে আনা হয়। একই সাথে বাজারে যে লিচু বিক্রি হচ্ছে তার অধিকাংশই স্থানীয়। আর গ্রীস্মের অন্যতম রসাল ফল কাঁঠালের সবটাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সাধারণত প্রতিবছরই জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রতিটি বাসা বাড়িতে মৌসুমী ফলের প্রতি বিশেষ করে আম, লিচু আর কাঁঠাল কেনার প্রতি চাহিদা বাড়ে অধিকাংশের। মৌসুমের প্রথম সময় এখন তাই বাজারে এখন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, তালের শাস সবই পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফল কেনার প্রতি বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে শহরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
শহরের ভাস্কর্য মোড়, কাঁচা বাজার, বড় বাজার, মহিলা কলেজের সামনে, বাসস্ট্যান্ড, সরকারি হাসপাতাল সম্মুখ, এলাকার ফলের দোকান সমূহে প্রতিকেজি আম বিক্রি করা হচ্ছে জাতভেদে ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে। ১’শ লিচু বিক্রি করা হচ্ছে ১’শ থেকে ২’শ ৫০ টাকায়। বাজারে কাঁঠাল এখনো বেশি একটা আসেনি। প্রতিটি পাকা কাঁঠাল ১২০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৩০০ টাকা, তরমুজের দাম বর্তমানে কমতির দিকে। প্রতি হালি সফেদা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে আছে জামরুল। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। আছে তালশাস এবং পেঁপে। বাজারে লিচু সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আম, জাম, জামরুল ও কাঁঠালের সরবরাহ এখনও ব্যাপকহারে শুরু হয়নি। বিক্রেতারা বলেন, যদিও কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে তবে ১০-১২ দিন পর ব্যাপকহারে কাঁঠালসহ অন্যান্য ফল বাজারে আসবে।
ফল বিক্রেতা চুন্নু মিয়া জানান, বর্তমানে বাজারে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ আর গুটি, হিমসাগর, ল্যাংড়া আম বিক্রি হচ্ছে। এ জাতের আম এখন পর্যন্ত স্থানীয় বাগানের আম বিক্রি করা হচ্ছে। আরো কিছুদিন পরে সাতক্ষীরা ও মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল হতে আসবে। তিনি আরো জানান, এছাড়া বাজারে যে সকল লিচু বিক্রি হচ্ছে তার অধিকাংশই স্থানীয়। আর দৃশ্যমান কাঁঠাল স্থানীয় বাগানের।
উপজেলার কাঁঠালের বাজারে এখনো জমে উঠেনি। বিক্রেতা ও ক্রেতারা জানিয়েছে মৌসুমের শুরুতে বাজারে কাঁঠালের কদর ও বাড়ছে । আমের দাম কিছুটা কম হলেও কাঁঠালের মূল্য চড়া। মৌসুমী ফল বিক্রেতারা কাঁঠাল ক্রয় করার জন্য আসছেন পাইকারী বাজারে। আবার কেউ কেউ সরাসরি গ্রামে যেয়ে বাগান থেকে কাঁঠাল ক্রয় করে সরবারাহ করছে খুচরা বাজারে। খুচরা ব্যবসায়ী তারেক বলেন, আমাদের এ অঞ্চলের কাঁঠাল খুব স্বুস্বাদু রসালো এর চাহিদাও আছে। তিনি বলেন, ১০-১২ দিন পরে কাঁঠালের বাজরা জমে উঠবে। বর্তমানে ছোটকাঁঠাল রান্না করে খাওয়ার জন্য বেশ বিক্রি হচ্ছে।
মৌসুমী ফলের মধ্যে কাঁঠালের উপকারিতা সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের টিএইচ ও লুৎফুন নাহার লাকি বলেন, কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক, এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালের প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। এ ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধি কমে। পাশাপাশি পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। পাকা কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন এ আছে যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন বলেন, এ অঞ্চলের কাঁঠালসহ মৌসুমী ফলের চাষ বেড়েছে। এবছর ভালো ফলন হয়েছে ।