বাসস
  ২৪ মে ২০২৩, ১৯:০০
আপডেট : ২৪ মে ২০২৩, ১৯:২৫

জাতীয় কবি’র ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমির বিভিন্ন কর্মসূচি

ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আগামিকাল বাংলা একাডেমি একক বক্তৃতা, নজরুল পুরস্কার প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আজ বুধবার বেলা ১১ টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথম দিনের আয়োজনে নজরুলসংগীত-চর্চা ও প্রসারে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রখ্যাত শিল্পী শাহীন সামাদ-কে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত নজরুল পুরস্কার ২০২৩-এ ভূষিত করা হয়। শিল্পীর হাতে নজরুল পুরস্কারের সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট এবং পুরস্কারের অর্থমূল্য দুইলাখ টাকার চেক তুলে দেন বাংলা একাডেমির সভাপতি এবং মহাপরিচালক। 
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি নিয়ে শিল্পী শাহীন সামাদ বলেন, নজরুল আমাদের সারাজীবনের চর্চা ও সাধনার বিষয়। বাংলা একাডেমির প্রদত্ত নজরুল বিষয়ক এ অমূল্য সম্মাননা আমার শিল্পীজীবনে অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের বার্তা বয়ে এনেছে। 
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। 
‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ : বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ’ এই প্রতিপাদ্যে নজরুল বিষয়ক একক বক্তৃতা প্রদান করেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। 
পরে,সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু এবং রুবিনা আজাদ। নজরুলগীতি পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াসমিন মুশতারী এবং রাহাত আরা গীতি। 
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, কোনো ধরনের আপসরফা কিংবা গোলটেবিলের পথে নজরুল ভারত বা বাংলার স্বাধীনতা চাননি। তিনিই তো সেই উদয়পথের কবি যিনি বলেছিলেনÑ ‘বাংলা বাঙালির হোক, বাংলার জয় হোক, বাঙালির জয় হোক’। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুও কখনোই আপসরফা কিংবা সমর্পণের রাস্তায় স্বাধীনতার কথা বলেননি। বরং নজরুলের মতোই গোটা জাতির বুকে বিদ্রোহের আগুন প্রজ্বলিত করেছেন এবং তাঁদের অনিবার্য স্বাধীনতার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ করেছেন; বলেছেনÑ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। 
এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বলেন, এবারের ১২৪তম নজরুলজয়ন্তীর প্রধান প্রতিপাদ্য ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ : বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ’। এই প্রতিপাদ্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সঙ্গত। ১৯২২-এর শেষে নজরুল যে অগ্নিবীণা বাজিয়েছেন, এর ঠিক অর্ধশতাব্দী পর অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে অগ্নিবীণার সুর সারা বাংলায় ছড়িয়ে দিয়েছেন স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্ররূপে। 
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, নজরুল এবং বঙ্গবন্ধু বাংলা, বাঙালি এবং বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য সত্তার নাম। তাঁদের সারাজীবনের সংগ্রামের মূল প্রতিপাদ্য এবং গন্তব্য ছিল বাংলার খেটে খাওয়া, দুখী মানুষের সার্বিক মুক্তি এবং সমৃদ্ধি। 
দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে আগামীকালের কর্মসূচিতে রয়েছে, সকাল ৮ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়া বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে স্থাপিত নজরুল প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। 
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর প্রয়াণে এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণেÑ তাঁদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।