শিরোনাম
// মো.শফিকুল ইসলাম //
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৬ মে, ২০২৩ (বাসস): আলমগীর হোসেন (৪৮)। তিনি একজন কৃষক। মৌসুম অনুযায়ী লালশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইশাক, ঢেঁড়স, পাটশাক, বেগুন, করলা, বরবটিসহ নানা প্রকার শাক সবজি চাষ করেন। সেই সঙ্গে প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেলে করে এসব শাক-সবজি বিক্রি করতে ছুটে চলছেন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে।
শাক-সবজি চাষ করে নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে প্রতি মাসে খরচ বাদে তার আয় হচ্ছে ২০-২৫ হাজার টাকা। কঠোর পরিশ্রম আর নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তার বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কৃষক আলমগীর হোসেন।
কৃষক আলমগীর হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের সন্তান। শাক-সবজি পরিচর্যা আর বিক্রি সব কিছুই তিনি নিজে করছেন। সবজি চাষে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় তিনি এখন বছর জুড়ে নানা প্রকারের শাক সবজি চাষ করে আসছেন। আর এই চাষে ঘুছিয়েছেন পরিবারের অভাব অনটন। তিনি জমিতে শাক-সবজি পরিচর্যার পাশাপাশি বিক্রির জন্য শাক-সবজি তুলছেন। শাক-সবজির পরিচর্যা আর বিক্রি নিজেই করছেন। স্থানীয় পর্যায়েও রয়েছে তার শাক-সবজির ভালো কদর।
কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, কাজকর্ম না থাকায়, কোনো উপায় না পেয়ে ধার-দেনা করে প্রবাসে চলে যান। সেখানে ভালো কিছু করতে না পেরে আবার দেশে ফিরে আসেন। এরপর তিনি সবজি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে বাড়ি সংলগ্ন দেড় বিঘা জমিতে প্রথমে তিনি লালশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইশাক, বেগুন দিয়ে তার যাত্রা শুরু করেন। ফলন ভালো হওয়ায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে খরচ বাদে ভালো টাকা আয় হয়। এরপর শাক সবজি চাষের প্রতি তার মনোবল আরো বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে মৌসুম অনুযায়ী সারা বছরই শাক-সবজি চাষ করছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে শাক-সবজি বাইসাইকেল নিয়ে গ্রামে-গ্রামে ঘুরে ১২০০-১৫০০ টাকার উপর বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া অনেকে তার বাড়ি থেকে সবজি ক্রয় করছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সকালে কৃষক আলমগীরের কাছ থেকে ক্ষেতের টাটকা শাক-সবজি আমরা ক্রয় করে থাকি। তার শাক সবজি খুবই ভালো। গৃহনী মমতাজ বেগম বলেন, এখন শাক-সবজি কেনা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয় না। প্রতিদিন সকালে বাড়িতে সবজি নিয়ে আসেন। বাজারের দামেই কেনা হয় সবজি।
এই ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম জানান, আলমগীর একজন আদর্শ কৃষক। তিনি বারমাসই নানা প্রকার শাক-সবজি আবাদ ও বিক্রি করে আসছেন। শাক-সবজি আবাদে সরকারি যত সহায়তা রয়েছে তাকে দেয়া হচ্ছে।