বাসস
  ১২ জুন ২০২৩, ১২:২৭

শেরপুর ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার সম্প্রদায়

শেরপুর, ১২ জুন, ২০২৩ (বাসস) : জেলায় ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার সম্প্রদায় । ঈদ-উল-আযহার  আর মাত্র কয়েকদিন বাকি।
আর এ ঈদকে সামনে রেখে কোরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ চাকু, দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। এসব তৈরিতে  ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পেশাদার কামার সম্প্রদায়।
মেশিনের তৈরি লোহার যন্ত্রপাতি দেখতে সুন্দর ও অধিক ধাড়ালো হয়, এমনকি দাম ও সময় অপেক্ষাকৃত কম লাগে। তাই কামারদের তৈরির জিনিসের চেয়ে মেশিনের তৈরি চাকু, দা, ছুরি, বটি, চাপাতিসহ বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ক্রমেই বাড়ছে। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই মূলত কিছু কামার এখনো এ পেশায় জড়িয়ে আছেন বলে অনেক কামার জানান। তারা বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় এ পেশায় সাধারণত আয় ও সম্মান উভয়ই কম। তাই আমাদের অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
কামাররা জানান, এক সময় তাদের বেশ কদর ছিল, বর্তমানে তা আর নেই। এখন হাতে তৈরি জিনিসের কদর কমে গেছে। তাই সারা বছর তেমন কোন কাজ থাকেনা। তবে ধান কাটার মৌসুম ও কোরবানী উপলক্ষে তাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। এসময় তাদের দৈনিক এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় হলেও, ব্যয় বাদে তাদের হাতে থাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
এসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মৌসুমি চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারীও বিক্রি করনে বলে জানা গেছে। অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার লোহার দাম অনেক বেশি হওয়ায় লোহার তৈরি জিনিসের দামও বেড়েছে। দা ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, ছুরি ছোট ১৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, চাপাতি ১,০০০ টাকা থেকে একহাজার ৫০০ টাকা করে বেচা-কেনা হচ্ছে। কামররা বলছেন, লোহার দাম ও শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় যন্ত্রপাতির দাম একটু বেড়েছে।
নকলা শহরের যাত্রী ছাউনির পিছনের লোহার তৈজসপত্র তৈরির কারিগর (কামার) মস্তুফা মিয়া বলেন, আমি অন্যকোন কাজ তেমন পারিনা, তাই বাধ্য হয়েই বাপ-দাদার এ ঐতিহ্যবাহী কর্মকে এখনো ধরে রেখেছি। এ আয় দিয়েই সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়া-লেখার খরচ বহন করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আগে নকলা শহরের প্রাণকেন্দ্রের কাচারী মসজিদ মোড় হতে পূর্বদিকে যাওয়ার রাস্তায় বেশ কিছু কামারের দোকান ছিল। আর তাদের অবস্থানগত পরিচিতির জন্যই নকলা শহরের জনবহুল ও গুরুত্বপূূর্ণ ওই এলাকার নাম করন করা হয়েছিল কামার পট্টি।