শিরোনাম
ঢাকা, ১৫ জুন, ২০২৩ (বাসস) : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিতে ব্রডব্যান্ড নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করতে একদেশ একরেট কর্মসূচি অ্যালায়েন্স ফর এ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট (এফরএআই) আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। ব্রডব্যান্ডের ন্যায় মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও এই রেট কার্যকর করা হবে।
তবে, ‘ইন্টারনেট সহজলভ্য করলেই চলবে না’-এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার বিষয়টিও এখন খুবই জরুরী। এজন্যই সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে একটি লাগসই জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
মোস্তাফা জব্বার আজ রাজধানীর বিটিআরসি মিলনায়তনে ‘সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্রডব্যান্ড নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন’ শীর্ষক এক আলোচনায় সচিবালয়স্থ তার দপ্তর থেকে অনলাইনে (ডিজিটাল প্লাটফর্ম) সংযুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এ সময় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ‘গ্লোবাল ভিলেজ’র প্রেক্ষাপটে বলেন, ‘আজকের বিশ্ব-সভ্যতায় অগ্রগতির জন্য ডিজিটাল সংযুক্তি অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নকে আমরা উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগের আওতায় এনেছি। এখন আমরা প্রতিটি গ্রামকে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনার কাজ শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি বাড়ি উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনা হবে।’
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ, কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ, এফরএআই’র পলিসি এন্ড রেগুলেটরি এক্সপার্ট আনজু মঙ্গল, উইমেন ইন ডিজিটাল’র সিইও নিলা আছিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লাফিফা জামাল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নোভা আহমেদসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নারী, প্রতিবন্ধী, বাস্তচ্যুত এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ এ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী, প্রতিবন্ধী, জেলে, বেদে প্রভৃতি শ্রেণির মানুষের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেট সহজলভ্য করার পাশাপাশি তাদের জন্য ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারের দক্ষতা ও তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা অপরিহার্য। এজন্য সরকারের পাশাপশি বেসরকারি সংস্থা, সংশ্লিষ্ট ট্রেডবডিসহ সকলকে সম্মিলিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বর্তমান সভ্যতার নতুন একটি বিষয় এ কথা উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগামী দিনে সামনে যাওয়ার বাহন হচ্ছে ইন্টারনেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশে ডিজিটাল অবকাঠামোসহ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে মাত্র সাড়ে ৭ জিবিপিএস ব্যান্ডউদথ ব্যবহৃত হতো এবং ব্যবহারকারি ছিলো ৮ লাখ মানুষ। বর্তমানে ৪১০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউদথ ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ব্যবহারকারির সংখ্যা সাড়ে ১২ কোটি। দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা মোবাইল ফোনের ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। ‘আমরা ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করেছি’। ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হলে মানুষ উচ্চগতির মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা পাবে। এর ফলে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মোবাইল ইন্টারনেটের মধ্যে বিদ্যমান গতির পার্থক্য অনেকটাই হ্রাস পাবে। কোভিড এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ কাজ পিছিয়ে আছে। মন্ত্রী একটি অর্থবহ ব্রডব্যান্ড নীতিমালা তৈরির জন্য আলোচনায় অংশগ্রহণকারী অংশীজনদের মতামত লিখিত আকারে পেশ করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গুজব প্রচার এবং জুয়াসহ পর্নগ্রাফি করা হচ্ছে। আমরা সীমিত প্রযুক্তি দিয়ে তা মোকাবেলার চেষ্টা করছি। আমাদের চেষ্টার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহারকারিদেরও এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করতে হবে ।’