শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২১ জুন, ২০২৩ (বাসস) : কোরাবানীর পশুর হাটে জালনোট, ছিনতাই ও প্রতারণা একটি বড় ধরণের প্রতিবন্ধকতা। এ বিড়ম্বনা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাকে রক্ষায় স্মার্ট ক্যাশলেস লেনদেনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জের পশুর হাটে । ডিজিটাল এ লেনদেনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোন খরচ গুনতে হবে না। স্মার্ট বাংলাদেশের ক্যাশলেস লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার ৬ টি পশুর হাটে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসন, জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়,দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংকগুলো খামারিদের সাথে সমন্বয় ও মতবিনিময় করে এ কার্যক্রম শুরু করেছে।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে গোপালগঞ্জ শহরের মানিকদাহ হাউজিং প্রকল্প হাট, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকান্দি ইউনিয়নের তালা কেকানিয়া পশুর হাট, মুকসুদপুর উপজেলার টেংরাখোলা বাজার পশুর হাট, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী হাট, কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ী হাট ও কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া পশুর হাটে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিটাল লেনদেন শুরু করতে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করে।
এসব হাটে ব্যাংক এশিয়া, এবি ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক ক্যাশলেস লেনদেন পরিচালনা করবে। নগদ, বিকাশ, রকেট সহ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা থাকবে এসব হাটে ।
ব্যাংক এশিয়ার গোপালগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক তরুণ কুমার সরকার বলেন, কোরবানির পশুর হাটে নগদ টাকা লেনদেন করতে পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা ছিনতাই ও প্রতারণার শিকার হন । আবার জালনোটের ঝামেলাতো থাকেই । এ অবস্থা নিরসনে পশুর হাটে লেনদেন নির্বিঘœ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ক্যাশলেস ডিজিটাল লেনদেন চালুর নির্দেশনা দিয়েছে । সেই নির্দেশা মেনেই আমরা সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত পশুর হাট করতে কাজ করছি। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিসাব খোলার কাজ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে । পশুর হাটগুলোতে সেবা দিতে আমরা সব পস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোবিন্দ চন্দ্র সরদার বলেন, গোপালগঞ্জে এ বছর কোরবানির জন্য ৩ হাজার ২৫ জন খামারি ৩১ হাজার ১২১টি গবাদি পশু পস্তুত করেছেন । খামারিরা যাতে নিরাপদে গবাদি পশু বিক্রির টাকা ঘরে তুলতে পারেন, তার জন্য ক্যাশলেস ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । আমরা খামারিদের ডিজিটাল লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করেছি।এতে খামারিরাও ব্যাপক সাড়া দিয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের খামারি রিপন আলী খান বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন আমাদের সময় বাঁচাবে। জালনোট, ছিনতাই ও প্রতারণার হাত থেকে আমরা রক্ষা পাব। পশু বিক্রির টাকা ঝামেলা বিহীনভাবে ঘরে তুলতে পারব। জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা সোয়াইব আহমেদ বলেন, এটি আমাদের পশুরহাটের লেনদেন নিরাপদ করবে।স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্যাশলেস পশুরহাট একটি স্মার্ট উদ্যোগ।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল অনুসারে জনগণের সব লেনদেনের প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ‘ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমের’ আওতায় আনার জন্য ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ কার্যক্রম হাতে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কার্যক্রমের আওতায় চলতি বছরের কোরবানির পশুর হাটে বেচাকেনার জন্য গোপালগঞ্জের ৬ টি পশুর হাটে লেনদেন বাংলা কুইক রেসপন্স (কিউআর) কোডসহ অন্যান্য স্মার্ট মাধ্যম ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে কেনাবেচার পাশাপাশি হাসিলের অর্থও ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিশোধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে জালনোট, ছিনতাই ও বিভিন্ন প্রতারণা প্রতিরোধ করা সম্ভব। ডিজিটাল লেনদেনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোন খরচ গুনতে হবে না।