ঢাকা, ২১ জুন, ২০২৩ (বাসস) : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান মিজানের ১৪ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় মিজানের ছোটভাই মাহবুবুর রহমান, ভাগনে মাহমুদুল হাসান ও স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœাকে সাত বছর করে কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 
আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন। 
এ মামলায় ডিআইজি মিজান কারাগারে আটক রয়েছেন। জামিনে রয়েছেন তার ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান। তবে মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা শুরু থেকে পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। দুদকের এ মামলায় ২০২০ সালের ১ জুলাই আগাম জামিন আবেদন করলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। ২ জুলাই মিজানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। 
মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
এরপর দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ওই বছরের ২৫ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি। 
২০১৯ সালের ২৪ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদি হয়ে ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ডিআইজি মিজানসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ডিআইজি মিজান ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রতœা ওরফে রতœা রহমান, ছোটভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসান। 
২০২০ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আসিফুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলায় ৩৩ জনের মধ্যে ২৭ জন সাক্ষ্য দেন। 
এদিকে আরেকটি মামলায় ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে তথ্যপাচার ও ঘুষ লেনদেনের দায়ে ডিআইজি মিজানুর রহমান মিজানকে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম। এ মামলায় দুদকের তৎকালীন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের আট বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।