বাসস
  ২৪ জুন ২০২৩, ১০:০১

গোপালগঞ্জে কোরবানিযোগ্য উদ্বৃত্ত গবাদি পশু ৪ হাজার ৯৭১টি

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৪ জুন, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জে আসন্ন ঈদুল আযহা সামনে রেখে  কোরবানিযোগ্য উদ্বৃত্ত গবাদিপশু ৪ হাজার ৯৭১ টি ।
জেলার ৫ উপজেলার ৪ হাজার ২০৪ টি খামারে ঈদুল আযহা  উদযাপন উপলক্ষে ৩৫ হাজার ২১৪টি নিরাপদ  গবাদি পশু পস্তুত  করা হয়েছে।  গোপালগঞ্জ জেলায় মোট গবাদি পশুর চাহিদা ৩০ হাজার ২৪৩ টি। সেই হিসেবে জেলায় উদ্বৃত্ত গবাদি পশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭১টি।  গোপালগঞ্জ জেলার এসব গবাদি পশু মোটা তাজা করণে কোন প্রকার কেমিক্যাল বা অপদদ্রব্য পুশ করা হয়নি। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এসব গবাদি পশু মোটা তাজা করণে তদারকি করেছে।  তাদের পরামর্শে খামারিরা গবাদি পশু মোটাতাজা করেছেন। তাই এইসব গবাদি পশুর মাংস মানব দেহের জন্য নিরাপদ বলে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সরদার জানান, আমাদের জেলায় কোরবানির জন্য ৩৫ হাজার ২১৪টি পশু পস্তুত  করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৯ হাজার ৫৪০ টি ষাঁড় ৪৪০ টি বলদ, ৪ হাজার  ১১৬ টি গাভী, ৮ টি মহিষ, ১০ হাজার ৯০৭ টি ছাগল, ১৭৫ টি ভেড়া, ও  ২৮ টি গাড়ল রয়েছে। আমাদের জেলায় কোরবানিতে পশুর চাহিদা ৩০ হাজার ২৪৩ টি।আমাদের জেলা কোরবানির পশু উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা।এখানে উদ্বৃত্ত গবাদি পশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭১টি।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, খড় গম ও ডালের ভূষি, ঘাস, খৈইল, কুড়া খাওয়ায়ে এসব পশু মোটা তাজা করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের কোন  পশুতে খামারিরা কোন কেমিক্যাল বা অপ দ্রব্য পুশ করেনি। আমাদের পরামর্শে তারা মানব দেহের জন্য নিরাপদ মাংস উৎপাদন করেছে। এখন এসব পশু বাজারজাত করণের জন্য আমরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। ইতিমধ্যেই খামার থেকে গবাদি পশু বিক্রি শুরুহয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে গবাদি পশু ক্রয় বিক্রয়ের হাট বসেছে । এসব হাটে আমাদের মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।  কোরবানির হাটে জাল টাকা লেনদেন বন্ধ ও ছিনতাইকারীদের হাত থেকে গবাদি পশু ক্রেতা ও বিক্রেতাদের রক্ষায় গোপালগঞ্জে ৬টি ক্যাশলেস পশুর হাট বসানো হয়েছে।  ক্রেতা বিক্রেতারা এখানে ক্যাশ টাকা ছাড়াই ব্যাংক হিসাব বা অন্যান্য মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন।এতে ক্রেতা ও বিক্রেতার ক্যাশ টাকা বহনের ঝামেলা থাকছে না। ক্যাশলেস লেনদেনে ক্রেতা বিক্রেতাদের কোন খরচ নেই। উদ্বৃত্ত পশু বাইরের জেলায় পাঠাতে আমরা খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রভাস চন্দ্র সেন বলেন,  গোপালগঞ্জে উদ্বৃত্ত  গবাদি পশু রয়েছে। তাই গবাদি পশু অন্য জেলায় পরিবহন করতে আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নিরাপদে কোরবানির পশু পরিবহনে সব ধরনের আশ্বাস দিয়েছে । ফলে কোরবানির গবাদি পশু বাজারজাত করণে খামারীরা এ বছর হয়রানির শিকার হবেন না।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের খাটিয়াগড় গ্রামের খামারি পলাশ বালা বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরামর্শে আমি ৪টি  গরু  মোটাতাজা করেছি।কালু বাবুর ওজন সাড়ে ২৭ মণ,  টাইগারের ওজন ২৩ মণ,,  ধলুর ওজন ২২ মণ ও অন্যটির ওজন ২৫ মণ আমার এ গরুর মাংস  মানব দেহের জন্য নিরাপদ। আমি আশার করছি ৪টি গরু অন্তত ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব। এ বছর পশু খাদ্যের দাম ছিল  বেশি । তাই গবাদি পশু মোটা তাজা করতে বাড়তি খরচ হয়েছে। ইন্ডিয়া অথবা অন্য দেশ থেকে পশু না আসলে  কোরবানির হাটে আমারা গবাদি পশুর ন্যায্য মূল্য পাওয়ার আশা করছি। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাদের গবাদি পশু বাজারজাত করণের ব্যাপক ব্যবস্থা করে দিয়েছে ।এখানে আমার গরু বিক্রি না হলে ঢাকা নিয়ে যাব। 
গবাদিপশু ক্রেতা গোপালগঞ্জ শহরের মান্দারতলার বাসিন্দা শাহাদৎ হোসেন বলেন , গতকাল শুক্রবারশহরের মানিকদাহ হাউজিং মাঠের ক্যশলেস কোরবানির হাটে প্রচুর গবাদি পশুর আমদানি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর হাটে গবাদি পশুর দাম একটু বেশি।  ক্যাশলেস এ হাটের ব্যবস্থাপনা ভালো হয়েছে। এখানে পশু কেনা কাটায় কোন ভোগান্তি নেই।  তাই এ হাট থেকে পছন্দমতো পশু কিনতে পেরে আমি আনন্দিত।