বাসস
  ২৫ জুন ২০২৩, ১০:২৬

জয়পুরহাটে হাসুয়া, দা, বটি, ছুরি, চাকু তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারীরা

॥ শাহাদুল ইসলাম সাজু ॥
জয়পুরহাট, ২৫ জুন, ২০২৩ (বাসস) : মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা  উদযাপন হবে আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ জুন)। কোরবানীর পশু কেনার পাশাপাশি নতুন  ছুরি, চাকু দা, বটি , হাসুয়া তৈরির পাশাপাশি পুরাতন গুলোতে শান দেওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার কামারীরা।
ঈদুল আযহা উদযাপনে কোরবানীর অংশ হিসেবে পুরাতন দা, বটি, ছুরি, চাকু  ধার (স্থানীয় নাম শান দেওয়া) দেওয়ার পাশাপাশি নতুন দা, বটি, ছুরি, চাকু কেনার  ধূম পড়ে কামার শালা গুলোতে।  কোরবানির পশু জবাই ও মাংস টুকরা করার জন্য এসব অস্ত্র প্রতিটি মুসলিম পরিবারেই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বছরের অন্যান্য সময় এ অস্ত্র গুলোর তেমন ব্যবহার না থাকায় অধিকাংশ পরিবারে মরিচা ধরে পড়ে থাকে। কোরবানির সময় এলেই নতুন অস্ত্র কেনার  পাশাপাশি অনেকেই পুরাণো গুলো ধার  দিয়ে প্রস্তুত করেন। ফলে নতুন অস্ত্র তৈরি করা আবার পুরাণো গুলোতে ধার দেওয়ার ধুম পড়ে যায় কামারশালা গুলোতে। কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর তেমন কাজ না থাকেনা। কোরবানির ঈদের সময় দা, বটি , চাকু, ছুরি, হাসুয়া  তৈরি ও বেচা বিক্রি ভালা হবে এমন আশায় বুক বাঁধেন কামারীরা। চাহিদা থাকায় ব্যস্ততাও বেড়ে যায়, দিন রাত কাজ করতে হয় ।  এ শিল্পের প্রধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থ সংকটে পড়ে এ পেশা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে কামারদের। আগে ১শ/দেড়শো  টাকায় এক বস্তা কয়লা পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা  সাড়ে ৭ থেকে এক হাজার  টাকায় কিনতে হচ্ছে। কাজ না থাকায় এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেছেন অনেকেই।
জেলা শহরের নতুনহাট সড়কের কামারী প্রদীপ কর্মকার জানান, কোরবানির ঈদের সময় আমাদের কাজ বেড়ে যায়। বছরের অন্য সময় গুলোতে কাজ খুবই কম থাকে। ধার দেয়ার জন্য  প্রকার ভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা লাগছে। নতুন  দা, বটি, ছুড়ি , চাকু ও হাসুয়া প্রকার ভেদে ৩৫০ থেকে ৭৫০ পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে। লোহার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় খুব সীমিত লাভে এ গুলো বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে শুধু কোরবানির ঈদের বেচা-বিক্রি করে এ ব্যবসা টিকে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান কামারী সন্তোষ মহন্ত। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বেচা-বিক্রি  কিছুটা কম বলে জানালেন কামার সুদেব কর্মকার। মাংস কাটার জন্য ছুরি কিনতে আসা খনজনপুর এলাকার আসাদুজ্জামান জানান, ৯২ হাজার টাকায় গরু কিনে জবাই করার জন্য ছুরি কিনতে এসেছি। ছুরি, চাকু, হাসুয়ার পাশাপাশি বাজারে মাংশ কাটার কাঠের গুড়িও বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।