শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ জুন, ২০২৩ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর পক্ষে এ আবেদন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
এছাড়াও আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক আরেকটি আবেদনও দাখিল করা হয়েছে। আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ পাঠিয়ে দিয়েছেন চেম্বার কোর্ট বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী। আগামী ৩১ জুলাই আপিল বিভাগে এই আবেদন দুটির ওপর শুনানি হবে।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বিষয়টি বাসসকে নিশ্চিত করেছেন।
বিভিন্ন দাবিতে গত ১০ জুন রাজধানীতে সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বাসসকে বলেন, আমরা দুটি আবেদন করেছি। একটা হচ্ছে হাইকোর্টের রায় বলবৎ থাকার পরও ১০ বছর পরে জামায়াত কর্মসূচি পালন করেছে। আমরা জামায়াতের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি। আরেকটি আদালত অবমাননার। কারণ তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে যেখানে আদালত অবমাননার বিষয় আছে। অথচ হাইকোর্টের রায়ে তাদের নিবন্ধন অবৈধ। চেম্বার কোর্ট আবেদন দুটি গ্রহণ করে শুনানির জন্য ৩১ জুলাই দিন ঠিক করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই ধার্য তারিখে আবেদনগুলো শুনানির জন্য কার্যতালিকার শীর্ষে রাখতে বলা হয়েছে।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতকে নিবন্ধন দেয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ রিট করেন।
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন।
জামায়াতকে দেয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
সেসময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।
তবে এ রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।
পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ওই আপিল শুনানিতে উদ্যোগ নেন রিটকারী পক্ষ। সে অনুসারে আপিলটি ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার কার্যতালিকায় ওঠে।
এরপর ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সার সংক্ষেপ প্রস্তুত করতে চূড়ান্তভাবে দুই মাস সময় দেন।
সূত্র জানায়, এরই মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ আদালতে দাখিল করা হয়েছে।