শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ জুন, ২০২৩ (বাসস) : অতিবৃষ্টি হলেও জাতীয় ঈদগাঁহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি রয়েছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন ঈদুল আজহায় আমরা প্রতিকূল আবহাওয়ার আশঙ্কা করছি। সুতরাং সে প্রেক্ষিতে কোনোরকম যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে কারণে আজকের এই পরিদর্শন। আজকে যেমন অল্প বৃষ্টি হয়েছে, সেরকম অল্প বৃষ্টিতে নামাজ অবশ্যই সম্ভব হবে। আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে যেটা তথ্য পেয়েছি যে- ঈদের দিন ঝড় বৃষ্টি হতে পারে। অতিবৃষ্টি হলেও, ঝড় হলেও যেন মুসল্লিরা সুষ্ঠুভাবে জামাত আদায় করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করেছি। কোথাও যেন পানি না পড়ে এবং পানি পড়ার জায়গায় যেন জলাবদ্ধতা না হয় সেই ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি।’
আজ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদ-উল-আজহা’র প্রধান জামাত আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র তাপস এসব কথা বলেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন তেজগাঁও রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ড. মাওলানা মুশতাক আহমেদ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া মসজিদের মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান। এই ঈদ জামাতে মোকাব্বির হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ বেতারের ক্বারী মোঃ এমদাদুল ইসলাম এবং বিকল্প হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারী মোঃ ইসহাক।
মানবিক কারণে কোরবানির কার্যক্রম ২ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে ঢাকাবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আমি সকলের কাছে বিনীত নিবেদন করব, যাতে করে দুই দিনের মধ্যেই ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন যেন কোরবানির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। তৃতীয় দিনের জন্য যেন কোনো পশু রেখে দেয়া না হয়। এটা আমার বিনীত নিবেদন থাকবে। আমরা দেখেছি তৃতীয় দিনেও অনেকেই কোরবানি দিয়ে থাকেন। সেটি আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। কারণ আমাদের সব কার্যক্রমে জড়িত কর্মীদের ৭২ ঘণ্টার পরে কিন্তু বিশ্রাম দিতে হবে। তারা একটানা ৭২ ঘণ্টা কার্যক্রম চালাবে। সুতরাং এটা একটা অমানবিক হয়ে যায় যে- তাদের দিয়ে আবার কাজ করানো। এজন্য আমি সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করব।’
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে প্রয়োজনীয় সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। ঈদের দিন দুপুর ২টা থেকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে তদারকি এবং বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করব। গতবছর আমরা বলেছিলাম, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করব। আমরা সফল হয়েছি। এবারও আমাদের সেরকম প্রস্তুতি রয়েছে। বর্জ্য অপসারণে আমরা ৩৫০ এর উপর যান-যন্ত্রপাতি ব্যবহার করব। আমাদের প্রায় ১০ হাজার জনবল মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থাকবে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তদারকি করব। এছাড়াও আমাদের কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট করে অঞ্চলভিত্তিক, ওয়ার্ডভিত্তিক এবং হাটভিত্তিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা তদারকি করবে। আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি এবং এবারও আমরা সফল হব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘বর্জ্য রাখার জন্য পর্যাপ্ত থলে, স্যাভলন, ব্লিচিং পাউডার দেয়া হয়েছে। বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য যেসকল সামগ্রী দরকার সেগুলো আমরা দিচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে সকল প্রস্তুতি আমাদের নেয়া হয়েছে।’
এ সময় তিনি ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে- ঢাকাবাসীকে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত আদায় করার আহ্বান জানান এবং ঢাকাবাসীকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানান।
এছাড়াও জাতীয় ঈদগাহে প্যান্ডেলের অভ্যন্তরে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলেও তিনি জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন উপস্থিত ছিলেন।