বাসস
  ২৮ জুন ২০২৩, ১০:৪৫

গোপালগঞ্জে চামড়া সংরক্ষণের উদ্যোগ

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৮ জুন, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ ও দ্বিতীয় বৃহত্তর রপ্তানি পণ্য কোরবানির পশুর চামড়া সঠিক ভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনকে এ কাজে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সহযোগিতা করছে। ঈদুল আযহার কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার গুনগত মান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কোরবানির পশুর হাটে বিনামূল্যে ১০ টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে। এ লবন দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের ওপর  বিসিকের পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জ জেলার কোরাবানির পশুর হাটে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে। এছাড়া সঠিক নিয়মে চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণে বিতরণ করা হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত  সচেতনতা মূলক লিফলেট।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গোপালগঞ্জের এজিএম মোঃ হাবিবুর রহমান রাসেল বলেন, চামড়া আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ ও দ্বিতীয় বৃহত্তর রপ্তানি পণ্য। কোরবানির ঈদে দেশে সবচেয়ে বেশি পশু জবাই করা হয়। এ সময় দেশে সবচেয়ে বেশি চামড়া পাওয়া যায়। এসব পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষনের জন্য আমরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এছাড়া কোরবানির হাট ও মাদ্রসায় চামড়া সঠিক নিয়মে ছাড়ানো ও সংরক্ষণের ওপর ব্রিফিং করেছি। কোরবানির হাট ও মাদ্রায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য  ১০ টন লবণ বিনামূল্যে বিতরণ করেছি।  গোপালগঞ্জে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণের জন্য ২৯৪ মেট্রিক টন লবণের চাহিদা রয়েছে। গোপালগঞ্জে ২৯৬ মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে। এ জেলায় লবণের কোন সংকট নেই। এখানে চামড়া সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পরিবামন লবণ মজুদ রয়েছে। এ লবন দিয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে  বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দক্ষ লোক দিয়ে সতর্কতার সাথে সঠিক ছুরি ব্যবহার করে চামড়া ছাড়াতে হবে। চামড়া ছাড়ানোর ৪-৫ ঘন্টার মধ্যে চামড়ায় সঠিক নিয়ম ও পরিমানে লবণ প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনের পর্যাপ্ত পরিমান লবন নিকটস্থ ডিলার বা পাইকারী বিক্রতার কাছ থেকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। পশু কোরবানিকারীর বাড়তি ত্যাগ ও সহযোগিতায় কোন চামড়া নষ্ট হবে না।  মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী গুনগত মান সম্পন্ন চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন।  ফলে অপার সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ঘটবে। চামড়া আমাদের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর রপ্তানি পণ্য। তাই চামড়ার মাধ্যমে আমাদের বৈদেশিক মুদ্র্রা অর্জিত হবে। চামড়ার মাধ্যমে দেশ আরো সমৃদ্ধশালী হবে।
গোপালগঞ্জ বিসিকের প্রমোশন অফিসার সুজল বলেন, গোপালগঞ্জে প্রায় ৩১ হাজার পশু কোরবানি হবে। এছাড়া নড়াইল, বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গোপালগঞ্জে কোরবানির পশুর চামড়া ঢুকবে। সব মিলিয়ে গোপালগঞ্জে ৫০ হাজার পশুর চামড়া আমাদনি হতে পারে। এসব চামড়া সংরক্ষণের জন্য আমরা চামড়া ক্রেতা, আড়তদারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছি। আশা করছি এ বছর কোন চামড়া নষ্ট হবে না। সঠিকভবে সংরক্ষণ করবেন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রাপ্তরা।
গোপালগঞ্জের চামড়া ব্যবাসায়ী রজব আলী বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য আমরা জেলা প্রশাসন ও বিসিকের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ  পেয়েছি। এ প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে আমরা চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করব। চামড়ার গুনতম মান নিশ্চিত করব। এতে আমাদের চামড়া শিল্প সমৃদ্ধ হবে। মানসম্মত চামড়া বিদেশে রপ্তানি করে আমরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারব।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী হাটের কোবানির পশু ক্রেতা মঈনুল ইসলাম অপু বলেন, গরু কোনার পর জেলা প্রশাসন ও বিসিকের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে আমাকে ১০ কেজি লবণ দেওয়া হয়েছে। তারা সঠিক নিয়মে চামড়া সংরক্ষণের পরামর্শ ও লিফলেট দিয়েছে। তাদের পরামর্শ কজে লাগাব। অভিজ্ঞ লোক দিয়ে চামড়া ছাড়াবো। চামড়া পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করব।  তারপর লবন দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করব। এরপর মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে চামড়া বিক্রি করে দেব।  কোন অবস্থাতেই এ জাতীয় সম্পদ নষ্ট করব না।