শিরোনাম
॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটিতে গোপালগঞ্জ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে।
গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র গুলো ঘুরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছে শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এছাড়া গোপালগঞ্জের সিনেমাগুলোতেও ভিড় করছেন বিনোদন প্রেমী মানুষ ।হাজার-হাজার মানুষের পদভারে বিনোদন কেন্দ্র গুলো উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে।
বিনোদন কেন্দ্র গুলোর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসেছে রকমারী পণ্যের পসরা। এসব পণ্যের ব্যাপক কোনা-বেচা হচ্ছে। দোকানীরা কামিয়ে নিচ্ছেন নগদ অর্থ। এছাড়া ঘুরতে বের হওয়া মানুষ উঠছেন ভ্যান,রিকশা ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে। এতে ওই যানবাহন চালকদেরও আয় হচ্ছে । এ কারণে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র গুলো হচ্ছে শহরের শেখ রাসেল শিশু পার্ক,উলপুর জমিদার বাড়ি,চাপাইল সেতু, সাবানা পার্ক, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চেচানিয়াকান্দি অংশ, গোপালগঞ্জ রেল স্টেশন, বলাকইড় পদ্মবিল, শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ ও হরিদাসপুর লঞ্চঘাট ।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত দৃষ্টিনন্দন পাটগাতী লঞ্চঘাট, টুঙ্গিপাড়ার নান্দনিক স্টিমারঘাট, শেখ লুৎফর রহমান সেতু (পাটগাতী সেতু)দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ বান্ধব ইউনিব্লক সড়ক শেখ মারুফের বাগানবাড়ি, বর্ণি বাওড়, মিত্রডাঙ্গা ব্রিজ ও বাঘিয়ার নদীরপাড়।
কোটালীপাড়া উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র গুলো হলো মনোরম উপজেলা পরিষদ পুকুর ঘাট চত্বর , শাপলালয়, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স ও প্ল্লী উন্নয়ন একডেমি (বাপার্ড), কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যেও পৈতৃক বাড়ি,হরিনাহাটি জমিদার বাড়ি, ঘাঘর নতুন পৌর মর্কেট, রামশীল সেতু, পয়সারহাট সেতু উল্লেখযোগ্য।
কাশিয়ানী উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে হিরণ্যকান্দি গ্রামের শতবর্ষী আমগাছ, দৃষ্টিনন্দন ৬ লেনবিশিষ্ট মধুমতি সেতু (কালনা সেতু), ভাটিয়াপাড়া গোলচত্বর, ভাটিয়াপাড়া রেল স্টেশন, মধুমতি নদী, উপজেলা ভূমি অফিস ও পরানপুর বাওড়।
মুকসুদপুর উপজেলার বিনোদন স্পর্টগুলো হল স্বপ্নছায়া পার্ক, জলিরপাড় সেতু,মহারাজপুর ভূইয়াবাড়ি, বাটিকামারী জমিদারবাড়ি, চান্দা বিল, ও উজানী রাজবাড়ি, বানিয়ারচর ক্যাথলিক গীর্জা ।
ছুটি পেয়ে হাজার-হাজার বিনোদন ও ভ্রমণ পিপাসু গোপালগঞ্জে পরিবার পরিজনের সাথে ঈদ করতে এসছেন। তারা স্বজনদের সাথে নিয়ে বিনোদন স্পর্ট, জমিদার বাড়ি, দৃষ্টিনন্দন স্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত স্থানে ঘুরতে যাচ্ছেন। এখন থেকে নির্মল আনন্দ উপভোগ করে বাড়ি ফিরছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠি গ্রামের মীর্জা আহম্মদ আলী (৪০) বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে সাবানা পার্কে গিয়ে ছিলাম।সেখানে প্রকৃতির সৃগ্ধ শ্যমলিমায় সবাই হারিয়ে গিয়েছিলা। পুরো বিকেলটা এখানে খুব ভাল্ েকেটেছে। এখানে দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। এখান থেকে নির্মল আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরছি।
গোপালগঞ্জ শহরের পাচুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মঈনুল আহসান (৩৫) বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে উলপুর জমিদারবাড়িতে গিয়ে ছিলাম। এক সময় উলপুর গ্রামে জমিদারদের প্রায় ৫শ’ সৌন্দর্য মন্ডিত ভবন ছিল। কালের গর্ভে অনেক ভবন হারিয়ে গেছে। জমিদারদের বংশধর মৃনাল কান্তিু রায় চৌধূরী জমিদারদের মূলবাড়ি ও কালিবাড়ি সংস্কার করেছেন। বাড়িটির ভবন, মন্দির, বঙ্গবন্ধু কর্নার, পুকুরপাড় নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। এ বাড়িটি সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করেছে। ঈদের ছুটিতে উলপুর জমিদার বাড়ি ঘুরতে পেরে আমাদের পরিবারের সবার ঈদের আনন্দ বহুগুনে বেড়ে গেছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের শেখ রহমত আলী (৬০)বলেন, টুঙ্গিপাড়া পাটাগাতী লঞ্চঘাট ও টুঙ্গিপাড়া স্টিমারঘাট বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত। তাই এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসছেন। সৌন্দর্য উপভোগ করছেন । বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর গ্রামের ইজিবাইক চালক নজর মিয়া (৩০) বলেন, ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জমিদার বাড়িতে আসছেন। তারা ইজিবাইকে ঘুরছেন। ঈদের বখশিস দিচ্ছেন। এতে আমাদের প্রতিদিন ২০০০ টাকা আয় হচ্ছে।
উলপুর জমিদারবাড়ির পাশের দোকানী ইমরান আলী (৩৫)বলেন, এখানে সারা বছরই লোকসমাগম হয়। ঈদের সময় এটি আরো বৃদ্ধি পায়। তাই এখন কেনা কাটা ভাল হচ্ছে । ঈদ, কোরবানি , পূজা সহ বিভিন্ন উৎসবে উলপুর জমিদার বাড়িতে লোক সমাগম লেগেই থাকে। তাই উৎসবে ভালো সেল হয়। আয়ও বেশি হয়।এখানে দোকানদারী করে ভালো আছি।