শিরোনাম
সংসদ ভবন, ৫ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ ও অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ এবং বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল, ২০২৩ পাস হয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার আজ জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন এবং ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
প্রস্তাবিত আইনের অধীনে কেউ সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে বা মজুদ সংক্রান্ত সরকারের কোন নির্দেশনা অমান্য করলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ড প্রদান করা হবে।
এই আইনের অধীনে কোন ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোন মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে এটি হবে একটি অপরাধ এবং এর জন্য ৫ বছর কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড, সরবরাহ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড, বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ২ বছরের কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড, কোন শ্রমিক, কর্মচারি, ঠিকাদার, মিল মালিক, ডিলার বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোন ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন বা এ সংক্রান্ত কোন কর্মসম্পাদনে কর্তব্য পালনে বিরত থাকা বা কর্তব্য পালনে বাধা প্রদান করলে তাকে তিনি ১ বছরের কারাদন্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড প্রদান করা হবে।
ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬ এবং ফুড গ্রেইন সাপ্লাই (প্রিভেন্ট অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাক্টিভিটি) অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯ রহিতক্রমে যুগোপযোগী করে প্রস্তাবিত আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহকে আইন আকারে প্রণয়ন এবং ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের আইনসমূহকে যুগোপযোগী করে বাংলা ভাষায় নতুনভাবে প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য গত ২০১৯ সালের ১৭ জুন মন্ত্রিসভা-বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, বিলটিতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, বিপণন, মজুদকরণ, সরবরাহ, বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয়, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ইত্যাদি সংক্রান্ত অপরাধ ও দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া এই আইনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, অবৈধভাবে খাদ্যদ্রব্য মজুদের কোন সুযোগ থাকবে না এবং জনস্বার্থ সমুন্নত হবে মর্মে আশা করা যায়।