বাসস
  ১১ জুলাই ২০২৩, ১০:১৭
আপডেট  : ১১ জুলাই ২০২৩, ১০:২০

যশোরে প্রতি মাসে দেয়া হচ্ছে ৪শ’ মেট্রিকটন চাল-আটা

যশোর, ১১ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : জেলার গরীব মানুষ প্রতিমাসে ওএমএসের প্রায় ৪শ’ মেট্রিকটন চাল ও আটা স্বল্পমূল্যে কিনতে পারছেন। গত একমাস এ কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ফের চালু হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। রোববার  সকাল ১০টায় যশোরের ১৪টি ডিলার পয়েন্টে এ চাল ও আটা বিক্রি হচ্ছে।
এসব ডিলার সরকারি ছুটি বাদে সপ্তাহে ৫ দিন এসব মালামাল বিক্রি করছেন। ১৪ জন ডিলারের জন্য প্রতিদিন বরাদ্দ ৬ মেট্রিকটন চাল ও ১২ মেট্রিকটন আটা। মাসে যার মোট পরিমাণ ৪শ’ মেট্রিকটন।   
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের গরীব মানুষের জন্য সরকার ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেলিং) কার্যক্রম শুরু করে। এ কার্যক্রমে সরকার শতকোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। বাজার দরের চেয়ে অনেক কম দামে চাল-আটা কিনে গরীব মানুষ তাদের সংসার নির্বাহ করছেন। বর্তমানে এ কার্যক্রমের আওতায় যশোর শহরের ১৪টি পয়েন্টে ওএমএসের খাদ্যপণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এ জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় ১৪ জন ডিলার রয়েছেন।  এ কার্যক্রম বন্ধের আগে যশোরে ছিল ১১ জন ডিলার। কিন্তু নতুন করে বেড়েছে তিনজন। এসব ডিলারদের শহরের পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের ্র বিভিন্ন পাড়া-মহল্ল­ায় বিভক্ত করা হয়েছে। তারাই সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডেও গরীবদের মাঝে সরকারি ভূতুর্কির চাল ও আটা বিক্রি করছেন।
সূত্র জানায়, গত একমাস ৮ দিন আগে ১ জুন থেকে সারাদেশের ন্যায় যশোরেও ওএমএসের চাল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। আর ঈদ উপলক্ষে ২৮ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত  আটা বিক্রি বন্ধ ছিল। এতে বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। অবশ্য এ কার্যক্রমের আধুনিকায়নের জন্য খাদ্য বিভাগ চাল বিক্রি সাময়িক বন্ধ রাখে। তারা ওএমএস গ্রাহকদের কার্ডের আওতায় আনতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ গত ৯ জুলাই রোববার থেকে শহরের ১৪টি ডিলার পয়েন্টে চাল ও আটা বিক্রি ফের শুরু হয়েছে। এতে গরীব মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। এক্ষেত্রে ২৪ টাকা কেজি দরে আটা ও ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে নতুন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে  ২১৪ জন গরীব মানুষ পাবেন চার কেজি হারে আটা ও ১৪২ জন পাবেন তিন কেজি হারে চাল। এতে উপকৃত হবেন ৩৫৬ জন। তারা প্রতি সপ্তাহে একবার করে এসব খাদ্যপণ্য কিনতে পারবেন। এ হিসেবে ১৪ জন ডিলারের মাঝে শুক্র ও শনিবার বাদে প্রতিদিন খাদ্য বিভাগ সরবরাহ করছে ১২ মেট্রিকটন আটা ও ৬ মেট্রিকটন চাল। প্রতি মাসে ৮ দিন সরকারি ছুটি বাদে ২২ দিনে সরবরাহের মোট পরিমাণ ৩৯৬ মেট্রিকটন। এরমধ্যে আটা ২৬৪ মেট্রিকটন ও চাল ১৩২ মেট্রিকটন। যা ডিলাররা প্রতিদিন তালিকা করে গরীবদের মাঝে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করছেন। আর কম দামে চাল ও আটা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন গরীব মানুষ। এ কারণে তারা খুব সকাল থেকেই চাল ও আটা কেনার জন্য শহরের বিভিন্ন ডিলার পয়েন্টে ভিড় জমান।
এ ব্যাপারে যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের ওএমএস ডিলার রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ও খাদ্য বিভাগের তদারকির মাধ্যমে তারা চাল ও আটা নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিক্রি করছেন। এক্ষেত্রে তারা সরকারি মূল্যে চাল ৩০ টাকা ও আটা ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ডিলারের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু তাদের বরাদ্দ বাড়েনি। ফলে তারা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী চাল ও আটা দিতে পারছেন না। এ কারণে তিনি বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি দাবি জানান।
বিষয়টি নিয়ে যশোর খাদ্য অফিসের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, ওএমএসের চাল ও আটা যাতে নিম্ন আয়ের মানুষ পেতে পারে, তার জন্য যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছেন। ডিলার পয়েন্টে একজন করে ট্যাগ অফিসার সমস্ত  কিছু তদারকি করছেন। তবে এ কার্যক্রমে তারা মানুষের চালের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। আগামীতে গোটা প্রকল্পটি কার্ডের আওতায় আসলে মানুষের জন্য ভর্তুকির এ চাল ও আটা কেনা সহজ হবে বলে তিনি জানান।