বাসস
  ১৩ জুলাই ২০২৩, ১৮:৫৯

অবৈধ সম্পদ অর্জন : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ১৮ সেপ্টেম্বর 

ঢাকা, ১৩ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। 
বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও এদিন দুদক প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এ কারণে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান নতুন এ দিন ধার্য করেন।
২০২১ সালের ১০ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদি হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন। মামলায় এস কে সিনহার বিরুদ্ধে নিজের ভাই ও আত্মীয়ের নামে ৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করে তা স্থানান্তর ও হস্থান্তরের অভিযোগ আনা হয়। 
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক  প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে উত্তরা আবাসিক এলাকায় নিজের নামে একটি প্লট বরাদ্দ নেন। পরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহার নামেও রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে তিন কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ করান।
এরপর তিনি প্রভাব খাটিয়ে তিন কাঠার প্লটটি পাঁচ কাঠায় উন্নীত করান। এক পর্যায়ে পূর্বাচলের প্লটটিকে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর সড়কে (বাড়ি নম্বর ১/এ) স্থানান্তর করান। পরে স্থানান্তরিত প্লটটিতে রাজউকের অনুমোদন করান তিনি। বরাদ্দ পাওয়ার পর এস কে সিনহা প্লটটির ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ নিয়োগ করেন তারই আত্মীয় শঙ্খজিৎ সিংহকে। 
অনুসন্ধানে দুদক প্রমাণ পায় যে, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজেই উত্তরার ওই প্লটের অনুকূলে রাজউকে মোট ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। পরে তার তত্ত্বাবধানেই ওই প্লটে নয়তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর মাধ্যমে এ নির্মাণ ব্যয় প্রাক্কলন করে দুদক।
দুদকের মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজউকের প্লটের মূল্য ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়াও ভবনের নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। সব মিলিয়ে এ বাবদ ৭ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা ব্যয় হয়। এর মধ্যে জনৈক খালেদা চৌধুরীর কাছ থেকে ভবনের একটি ফ্ল্যাট বিক্রির অগ্রিম ৭০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এ টাকা বাদে অবশিষ্ট ৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকা এবং আত্মীয় শঙ্খজিৎ সিংহের নামে একটি ব্যাংক হিসাবে স্থায়ী ও নগদে ৭৮ লাখ টাকা জমা পাওয়া গেছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। 
দুদকের অভিযোগ, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোট ৭ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৮৬৫ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভাই ও আত্মীয়ের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্থান্তর করেন। এ সম্পদ অর্জনের বৈধ কোনো উৎস নেই এবং তা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। 
এ অপরাধে সংস্থাটির ২০০৪-এর ২৭ (১) ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২-এর ৪ (২), (৩) ধারায় মামলা করে দুদক। 
এদিকে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় পৃথক দু’ধারায় ঢাকার একটি আদালত এস কে সিনহাকে ১১ বছর কারাদন্ড প্রদান করেন।