শিরোনাম
॥ মো.শফিকুল ইসলাম ॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১৪ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : জেলার আখাউড়ার আত্মপ্রত্যয়ী কলেজ শিক্ষার্থী রনি রাজ। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি যথেষ্ট মনোযোগী হলেও মাছ চাষ, গবাদি পশু পালনের প্রতি ছিল তার ভিন্ন আগ্রহ। ইউটিউব চ্যানেল আর ফেসবুকের কল্যাণে হাঁস খামারের ভিডিও দেখে পড়াশোনার ফাঁকে গড়ে তোলেন হাঁসের খামার। এরই মধ্যে তিনি এলাকায় একজন আদর্শ খামারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
রনি রাজ উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুরপহেলা গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে। যা দিয়ে নিজের পড়াশোনাসহ পরিবারের অন্যান্য খরচ মেটাচ্ছেন।
দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম আর সঠিকভাবে পরিচর্যা করে স্বল্প পুঁজিতে কিভাবে খুব সহজে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তিনি সেই চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তার খামারে ১৭৫০টি হাঁস রয়েছে। হাঁসের খামারের সাফল্য দেখে অনেকেই খামার করে হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। নিয়মিত তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
জানা যায়, রনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অনার্সে লেখাপড়া করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু আয় করার নিয়মিত স্বপ্ন দেখতেন। এক পর্যায়ে ইউটিউব ও ফেসবুকে হাঁস পালন দেখে খামার দেয়ার তার প্রবল ইচ্ছা তৈরি হয়। এরপর তার ফুফাত ভাই জহিরের সঙ্গে পরামর্শ করে গত বছর পরীক্ষামূলক ৪০০ হাঁসের বাচ্চা দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। প্রথম বছর তিনি হাঁস পালনে এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেন। এরপর থেকে তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গত দেড় মাস আগে ভৈরব থেকে তিনদিন বয়সী ২ হাজার হাঁসের বাচ্চা প্রতি পিচ ৩২ টাকায় ক্রয় করে বাড়িতে এনে লালন-পালন শুরু করেন। হাঁসের বাচ্চা ক্রয়, অন্যান্য খরচসহ তার ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে রয়েছে ১৭৫০টি হাঁস। ওষুধ খাবারসহ অন্যান্য খরচ মিলে তার দৈনিক ১ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এই হাঁসগুলো এক মাস পর বিক্রি করা হবে। স্থানীয় বাজারে এক একটি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
শিক্ষার্থী রনি জানান, হাঁস পালন করে আমি আমার নিজে ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। আমার উপার্জিত অর্থ দিয়ে লেখাপড়ার করার পাশাপাশি পরিবারকে সহয়তা করে যাচ্ছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ চিকিৎসকরা জানান, এই খামারে শিক্ষার্থী রনির ভাগ্যের চাকা বদলে দেয়ায় এলাকার যুবকরাও উৎসাহিত হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার এখন স্বপ্ন দেখছেন।
এই ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার জানান, হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। যে কোনো বেকার নারী-পুরুষ হাঁস পালনে এগিয়ে এলে সবাইকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে সাহায্য করা হবে। তিনি বলেন, এই উপজেলায় অনেকেই খামার করে হাঁস পালনের মাধ্যমে লাভের মুখ দেখছেন। খামারিদেরকে রোগ-বালাই থেকে রক্ষা পেতে সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।