শিরোনাম
ঢাকা, ১৮ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : গ্রামীণ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ব্যাপক এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ তথা তথ্যে প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিতকরণ এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকান্ডে সমন্বয় ও জবাবদিহিতা অধিকতর বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আজ ময়মনসিংহে ‘সুশাসন চর্চা ও তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রয়োগের মাধ্যমে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন’ বিষয়ক এক সামাজিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফ্রিডরিখ ন্যাউম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম বাংলাদেশ (এফএনএফ বাংলাদেশ)-এর সহায়তায় এবং বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) আয়োজিত এই সংলাপে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সরকারি- বেসরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, আইনজীবী, নাগরিক সমাজ সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মীসহ মোট ৪৫ জন অংশগ্রহণ করেন।
সংলাপ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক। এ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংলাপের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আলোচনা করেন বিএনএনআরসি’র প্র্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান। পরে এফএনএফ বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত এবং কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ডক্টর নাজমুল হোসাইন। সংলাপের এ পর্যায়ে ‘ময়মনসিংহের ভূমি, সমাজ ও স্বাস্থ্যসেবা: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমাজকর্মী ও গবেষক মোঃ শহিদুল ইসলাম।
এছাড়াও আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, লায়ন মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ- এর সভাপতিত্বে অংশগ্রহণকারীগণ অতিথিবৃন্দ এবং প্যানেল আলোচকদের কাছে জেলার সরকারী ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের সেবা, বিশেষ করে ভূমি ও স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া ও স্থানীয় পর্যায়ে মাদক, পর্যটন এলাকায় ও গণ পরিবহনে নারীদের যৌন হয়রানি, অবকাঠামোগত অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নানা প্রশ্ন করেন এবং সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জসমূহ উল্লেখপূর্বক সমাধানের উপায় সম্পর্কে জানতে চান।
সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মালেক বলেন, বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ প্রণয়ন করা হয়। এ আইনটি জনগণের জন্য নিবেদিত এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি আইন। এ আইনের মাধ্যমে জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সকল সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় সন্তোষজনকভাবে এ আইন বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, বাক-স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি মনিরা বেগম অনু বলেন, জনগণের অধিকার সঠিকভাবে পেলে সুশাসন নিশ্চিত হবে। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন মো. ফরিদ আহমেদ (যুগ্ম সচিব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কান্তি চক্রবর্তী। কবি ও সংস্কৃতি কর্মী স্বাধীন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংলাপে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন- ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক আঃ কাইয়ুম, ময়মনসিংহ সদর ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার এইচ এম ইবনে মিজান এবং ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ জাবেদ হোসেন।
উল্লেখ্য, বিএনএনআরসি একটি গণমাধ্যম উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা, যা ২০০০ সালে আত্মপ্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও বিষয়ক ব্যুরো থেকে নিবন্ধিত হয়। এটি জাতিসংঘের ইকোনোমিক এন্ড সোশ্যাল কাউন্সিল এর বিশেষ পরামর্শক মর্যাদা প্রাপ্ত সংস্থা এবং সংস্থাটি তথ্য সমাজ বিনির্মাণে অবদানের জন্য ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি জাতিসংঘের পুরস্কার-২০১৬ এর বিজয়ী এবং ২০১৭ এবং ২০১৯, ২০২০, ২০২১ এবং ২০২৩- এর চ্যাম্পিয়ন ।