বাসস
  ২২ জুলাই ২০২৩, ১৫:৫৪

লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে : আইনমন্ত্রী

ঢাকা, ২২ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন,
লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি,  পরিবার, সম্প্রদায় এবং সামগ্রিকভাবে জাতিকে প্রভাবিত করে
ও গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘‘জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স বেঞ্চ বুক লঞ্চ’’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আজ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 
আইনমন্ত্রী বলেন, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা কেবল শারীরিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে, পারিবারিক কাঠামোকে ব্যাহত করে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তরে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রগতিতে বাধা দেয়।
অনুষ্ঠানে ‘‘জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন অ্যাড্রেসিং জেন্ডার-বেইজড ভায়োলেন্স ইন বাংলাদেশ’’ এবং ‘‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল বেঞ্চ বুক অন দ্যা প্রিভেনশন অভ অপ্রেশন অ্যাগেইনস্ট উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন অ্যাক্ট, ২০০০’’ নামক দুটি বেঞ্চ বুক লঞ্চ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী আরো বলেন, বিচার বিভাগ ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলা এবং প্রশমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদালত এই ধরণের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে, যাতে তারা প্রতিকার পায় এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা বিষয়ক মামলার জটিল বিষয়গুলোর সহজ সমাধানে বিচার বিভাগীয় বেঞ্চ বুক দুটি বিচারকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। 
আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল স্তরের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক পরিসরে আইনি, প্রশাসনিক এবং নীতিগত সংস্কার করেছে। 
তিনি বলেন, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে সু-দৃষ্টি দিয়েই তাঁর সরকার ২০০০ সালে নারী ও শিশু  নির্যাতন দমন  আইন এবং ২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে। ২০১২ সালে পর্নোগ্রাফি (নিয়ন্ত্রণ) আইন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ আইন করেছে৷ এই আইনগুলো সহিংসতা এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হিসাবে দাঁড়িয়েছে৷ 
তিনি বলেন, নারী ও শিশুরা মানব পাচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু । এই ঘৃণ্য অপরাধ দমনে কৌশলগতভাবে ৭টি বিভাগীয় সদরে ৭টি মানব পাচার বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নারী ও শিশু  নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী ১০১টি বিশেষায়িত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এই দূরদর্শী পদক্ষেপগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ হিসেবে করেছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস, ইউএসএআইডি’র ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন ডাইরেক্টর সোনজাই রেনোল্ডস-কুপার, প্রোমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যাকটিভিট‘র চিফ অভ পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।