শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৩ (বাসস): ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ফকির আলমগীরের গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যে দেশের শিল্পীরা গান গেয়ে স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। গান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অংশ ছিলো এটা পৃথিবীতে বিরল ঘটনা। গান হৃদয়ে লালন করার মাধ্যমে দেশকে লালন করা যায়। একাত্তর সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় গানের মাধ্যমে যুব সমাজকে আন্দোলিত করে স্বাধীনতার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে ফকির আলমগীরের মতো শিল্পীরা গান গেয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন।’
আজ রবিবার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীরের নামে নামকরণকৃত সড়কের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শুরুতে ডিএনসিসি মেয়র খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীরের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া শেষে খিলগাঁও বি ব্লক, ছয় নম্বর রোড (মুক্তি ক্লিনিক সংলগ্ন) শিল্পী ফকির আলমগীর সড়ক নামে উদ্বোধন করেন।
মেয়র বলেন, ‘গণসংগীত শিল্পীরা যে গান গেয়েছেন সেগুলো মানুষকে উজ্জীবিত করে। ফকির আলমগীর, আজম খান, ফিরোজ সাঁই, পিলু মমতাজ, ফেরদৌস ওয়াহিদ, আব্দুল আলীম উনারা যে গানগুলো গেয়েছেন এগুলো শুনলে কেউ বাবা মাকে ভুলতে পারবে না, দেশকে ভুলতে পারবে না। আমি নিজে গান শুনি। এসব গান প্রাণের সঞ্চার করে। প্রখ্যাত এই গুণী শিল্পীদের গান হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। শিল্পীদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে এই সড়কটি শিল্পী ফকির আলমগীরের নামে নামকরণের মাধ্যমে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গুণী শিল্পীকে সম্মানিত করা হলো। একটি অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণ করতে হলে শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে। সমাজ থেকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর করতে সংস্কৃতির বিকাশ খুবই জরুরি। একটি সুস্থ সুন্দর সমাজের জন্য সংস্কৃতিকে লালন করতে হবে। আমরা অন্য শিল্পীদের নামেও সড়কের নামকরণ করবো।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন থেকে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হতে হবে। সবাইকে জানাতে হবে জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিসের লার্ভা জন্মায়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জমে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দিন।’
এসময় তিনি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্কুল, কলেজ, ক্লাবসহ বিভিন্ন সোসাইটিকে কাজ করার অনুরোধ জানান।
নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, কোথাও পানি জমছে এমনটা আপনাদের নজরে আসলে সেটা আমাদের জানান। পানি জমে আছে কিন্তু মশার ওষুধ ছিটানো হয়নি বা সিটি কর্পোরেশনের সেবা পাচ্ছেন না, এমন তথ্যও জানান।
ফকির আলমগীরের ছোট ভাই শিল্পী ফকির সিরাজের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী ফকির আলমগীরের সহধর্মিণী সুরাইয়া আলমগীর, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, পল্লীমা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শাখাওয়াত হোসেন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতু আক্তার।